পদ্মশ্রী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে সহবাস ও গর্ভপাতের অভিযোগ

বহরমপুর: পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের (Padma Shri Awardee Kartik Maharaj) বিরুদ্ধে সহবাস, জোর করে গর্ভপাত করানো এবং প্রতারণার মতো মারাত্মক অভিযোগ তুললেন এক মহিলা শিক্ষিকা।…

পদ্মশ্রী কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে সহবাস ও গর্ভপাতের অভিযোগ

বহরমপুর: পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজের (Padma Shri Awardee Kartik Maharaj) বিরুদ্ধে সহবাস, জোর করে গর্ভপাত করানো এবং প্রতারণার মতো মারাত্মক অভিযোগ তুললেন এক মহিলা শিক্ষিকা। এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা তো বটেই, তোলপাড় গোটা রাজ্য।

অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে নবগ্রাম থানার চাণক্য এলাকায় এক আশ্রমের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যান কার্তিক মহারাজ। সেখানেই তাঁকে শিক্ষকতার পদে নিয়োগ করা হয়। থাকার জন্যও আশ্রমেই একটি ঘর দেওয়া হয়।

   

অভিযোগকারিণীর বিস্ফোরক দাবি:
মহিলার অভিযোগ, কাজের সুযোগের আড়ালে শুরু হয় তাঁর দুঃস্বপ্ন। অভিযোগকারিণী জানান, এক রাতে আচমকা কার্তিক মহারাজ (Padma Shri Awardee Kartik Maharaj) তাঁর ঘরে এসে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। প্রথমে তিনি অস্বীকার করলেও পরে পরিস্থিতির চাপে পড়ে বাধ্য হন মহারাজের দাবি মেনে নিতে। অভিযোগ, একাধিকবার তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

আরও অভিযোগ, তিনি যখন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তখন তাঁকে জোর করে গর্ভপাত করানো হয়। তাঁর দাবি, মহারাজের আশ্রমে থেকেই দীর্ঘদিন এই অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।

আইনি পথে শিক্ষিকা:
শেষমেশ আর সহ্য করতে না পেরে, বৃহস্পতিবার রাতে নবগ্রাম থানায় কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই শিক্ষিকা। তাঁর দাবি, ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।

মহারাজের প্রতিক্রিয়া:
অন্যদিকে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন কার্তিক মহারাজ। রঘুনাথগঞ্জের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,
“আমার বিরুদ্ধে কে কী অভিযোগ করেছেন, আমি কিছু জানি না। আমার আইনজীবী যা বলার বলবেন। আমি এসব নিয়ে মোটেই বিচলিত নই।”

Advertisements

প্রশাসনিক তৎপরতা:
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযোগকারিণীর বয়ানও রেকর্ড করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া:
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নবগ্রাম এবং আশপাশের এলাকায়। একদিকে যাঁরা মহারাজের অনুগামী, তাঁরা এই অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন। অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অভিযোগকারিণীর ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত।

পদ্মশ্রী প্রাপ্তির পর মহারাজ:
প্রসঙ্গত, কার্তিক মহারাজকে ২০২২ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি। তবে এখন তাঁর বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাঁর ভাবমূর্তি।

পুলিশের তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, তা সময় বলবে। তবে ইতিমধ্যেই এই অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে প্রবল আলোড়ন।