ফের তিস্তায় হলুদ সতর্কতা, বৃষ্টি অব্যাহত উত্তরবঙ্গে

North Sikkim Landslide

জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গে ফের একবার দুর্যোগের আশঙ্কা। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ে জলবৃদ্ধির জেরে শনিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীতে (Teesta River) জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। গজলডোবা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার কারণে নদীপারের একাধিক এলাকা জলে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

Advertisements

সেচ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টায় গজলডোবা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয় প্রায় ৭৪২ কিউসেক, দুপুরে সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮৫৭ কিউসেকে। ফলে মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যদিও আপাতত জলঢাকা নদীতে কোনও সতর্কতা জারি হয়নি।

   

তিস্তার জলস্তর ক্রমশ নিম্নমুখী হলেও পাহাড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় উদ্বেগ কাটছে না। শুক্রবার রাতভর জলপাইগুড়ি, মালবাজার, মেখলিগঞ্জসহ একাধিক এলাকায় টানা বৃষ্টি হয়েছে। শনিবার সকালেও আকাশ ঘন মেঘে ঢাকা, মাঝেমধ্যে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬৯ মিলিমিটার। সিকিমের গ্যাংটকে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ২৭.০১ মিলিমিটার।

আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে আপাতত বৃষ্টি থামার কোনও সম্ভাবনা নেই। যদিও ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’-র প্রভাব ক্রমে দুর্বল হচ্ছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট নিম্নচাপ এখনও সক্রিয় রয়েছে। সেই কারণে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে।

এদিকে, দক্ষিণবঙ্গেও নিম্নচাপের প্রভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শনিবার ও রবিবার। সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টি কিছুটা কমলেও বুধবার থেকে নতুন নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ফলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ জুড়েই বৃষ্টি চলতে পারে।

Advertisements

প্রশাসনের তরফে নদীপাড়বর্তী গ্রামগুলিতে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। মেখলিগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, ধুপগুড়ি ও মালবাজারের প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রস্তুত রয়েছেন তারা। তিস্তার তীরে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সেচ দফতরের এক কর্তা জানান, “পাহাড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। আমরা গজলডোবা ব্যারেজে নিয়মিত নজর রাখছি এবং জলস্তরের পরিবর্তন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, নভেম্বরের শুরুতে এই বৃষ্টি তাদের জন্য নতুন চিন্তা তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই অনেক ক্ষেতেই ফসল ভিজে নষ্ট হচ্ছে। আবার বৃষ্টি বাড়লে আরও ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

উত্তরবঙ্গের মানুষ এখন বৃষ্টির পাশাপাশি তিস্তার গতিপ্রকৃতির দিকেও নজর রাখছেন। আকাশে মেঘ, মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, আর নদীর ধারে বাড়ছে উৎকণ্ঠা। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, এখনই শীতের কোনও ইঙ্গিত নেই  বরং বৃষ্টি চলবে অন্তত আরও কয়েকদিন।