শীতের পরশে আজ আবহাওয়ার হালহকিকত

winter-weather-update-kolkata-november-14-2025

কলকাতা, ১৪ নভেম্বর ২০২৫: শীতের প্রথম হাওয়ায় ভিজে উঠেছে বাংলার মাটি। গত কয়েকদিন ধরে উত্তুরের ঠান্ডা হাওয়া বইছে অবিরাম, আর তাতেই রাজ্যের প্রায় সব জেলায় পারদের স্তর নেমে এসেছে নিচের দিকে।

Advertisements

আজ শুক্রবার, যখন সকালের কুয়াশা এখনও আকাশকে আড়াল করে আছে, তখন আলিপুরের ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) জানিয়েছে যে, উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গ উভয় অঞ্চলেই আজ মূলত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে।

   

জঙ্গি গড়ার কারখানা আল-ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যপদ খারিজ করল অ্যাসোসিয়েশন

কোনো বড় বৃষ্টির ভয় নেই, কিন্তু সকাল-সন্ধ্যায় হালকা কুয়াশা আর শুষ্ক হাওয়ায় দিনটা কেটে যাবে। তবে, শীতের তীব্রতা বাড়ছে ধীরে ধীরে এমনকি দক্ষিণাঞ্চলে ন্যূনতম তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে নেমে আসতে পারে। এই খবর শুনে অনেকের মনে হয়তো একটা হালকা উত্তেজনা জাগবে, কারণ শীতের আগমন তো শুধু ঠান্ডায় নয়, সেই সঙ্গে আসে উঠোনের ধূমায়িত চায়ের কাপ আর শালের নরম ছোঁয়া।

আসুন প্রথমে দক্ষিণ বঙ্গের কথা বলি। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এই সব জেলায় আজ আকাশ মূলত পরিষ্কার থাকবে। আইএমডির পূর্বাভাস অনুসারে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ঘুরবে, যা গত সপ্তাহের তুলনায় একটু কম। কিন্তু সর্বনিম্ন তাপমাত্রা?

সেটা ১৮ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে, আর পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটা জেলায় এটা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি নিচে হয়তো ১৭-১৮ ডিগ্রি। কলকাতায় সকালে উঠে জানালা খুললে সেই হালকা কুয়াশা চোখে পড়বে, যা দৃষ্টিসীমা কমিয়ে দিতে পারে। দিনের বেলা রোদ এসে একটু উষ্ণতা ছড়াবে, কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই শীতের দাপট ফিরে আসবে। বাতাসের গতি হবে ১০-১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বইছে, যা শুষ্কতা বাড়িয়ে ত্বক আর চোখের জন্য একটু অসুবিধা তৈরি করতে পারে।

Advertisements

আইএমডি জানিয়েছে, এই অঞ্চলে কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় এলাকায় সামুদ্রিক প্রভাবে হালকা বাতাসের ঝাপটা লাগতে পারে। গত সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় ‘মোনথা’র প্রভাবে যে বৃষ্টির দাপট দেখা গিয়েছিল, সেটা এখন সম্পূর্ণ শান্ত। কিন্তু এই শান্তির মধ্যেই লুকিয়ে আছে শীতের প্রস্তুতি যারা অফিস যান, তারা সকালে একটা লাইটার সোয়েটার নিয়ে বেরোনো উচিত।

এবার উত্তর বঙ্গের দিকে চোখ ফেরাই। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর এই পাহাড়ি ও সমতল অঞ্চলে আজও শীতের ছোঁয়া একটু বেশি। আইএমডির সাপ্তাহিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে, ন্যূনতম তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকবে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটা হালকা পতন চলছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩০ ডিগ্রির মধ্যে, আর ন্যূনতম ১৬-১৮ ডিগ্রি।

দার্জিলিংয়ের মতো পাহাড়ি জায়গায় সকালের কুয়াশা ঘন হয়ে উঠতে পারে, যা পর্যটকদের জন্য একটা সুন্দর দৃশ্য, কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতা দরকার। চা বাগানের এলাকায়, যেমন জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সে, শুষ্ক আবহাওয়া চলবে, কোনো বৃষ্টির ছায়া নেই। বাতাস উত্তর থেকে বইছে, গতি ৮-১২ কিলোমিটার, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দেবে।

আইএমডি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে যে, এই সপ্তাহে (১৪-২০ নভেম্বর) উভয় অঞ্চলেই শুষ্কতা প্রাধান্য পাবে, তবে দক্ষিণ বঙ্গের পশ্চিমাংশে ন্যূনতম তাপমাত্রা একটু বেশি নিচে নামতে পারে। উত্তর বঙ্গে হিমালয়ের প্রভাবে কখনো কখনো হালকা মেঘলা আকাশ দেখা যায়, কিন্তু আজ তা থাকবে না। গতকালের তুলনায় আজ একটু উষ্ণ লাগতে পারে দিনের বেলা, কিন্তু রাত নামলেই শীতের জাঁক বসবে। চাষিরা এই শুষ্ক আবহাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন, কারণ ধান কাটার কাজ এখন চলছে জোরকদমে।