কলকাতা: শরতের মাঝখানে এসেও পশ্চিমবঙ্গের আকাশ যেন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে আছে। আজ, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (IMD)। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গের সমতল অঞ্চলে আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও গরমের তীব্রতা কিছুটা বাড়তে পারে।
রাজ্যের দুই ভাগেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি উপরে থাকবে, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে কিছুটা অসুবিধাজনক করে তুলতে পারে। আলিপুরের আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সপ্তাহের এই অংশে বৃষ্টির পরিমাণ উত্তরে স্বাভাবিকের নিচে এবং দক্ষিণে স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকবে, কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিধানসভাকে পাখির চোখ করে ‘শিল্পের সমাধান’ প্রকল্প শুরু রাজ্যের
এই পূর্বাভাস শুধু আকাশের খবর নয়, বরং কৃষক, যাত্রী এবং শহুরে জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।উত্তরবঙ্গের কথা আগে বলি। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা এবং পূর্ব বা পশ্চিম বর্ধমানের মতো এলাকায় আজ আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা বেশি।
IMD-এর সাপ্তাহিক পূর্বাভাস অনুসারে, সপ্তাহের দ্বিতীয় অংশে (২৪ থেকে ৩০ অক্টোবর) এই অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাপমাত্রার কথা উঠলে, সর্বোচ্চ ২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০-২২ ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে।
বাতাসের গতি মাঝারি, ১০-১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বইবে। আর্দ্রতার মাত্রা ৭০-৮০ শতাংশের কাছাকাছি থাকায়, বৃষ্টির সঙ্গে আসা উত্তাপ সহ্য করা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। পাহাড়ি এলাকায়, বিশেষ করে দার্জিলিংয়ে, সকালে কুয়াশা দেখা দিতে পারে, যা যাত্রীদের জন্য সতর্কতা।
কৃষকদের জন্য এই হালকা বৃষ্টি ধানের শেষ ফসলের জন্য উপকারী হলেও, বর্ধমানের মতো সমতল অঞ্চলে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি রয়েছে। IMD কোনো লাল বা কমলা সতর্কতা জারি করেনি, কিন্তু হলুদ সতর্কতা দিয়ে বলেছে, বজ্রপাতের সময় বাইরে না বের হওয়াই ভালো।এবার দক্ষিণবঙ্গের দিকে নজর দিন।
কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূমের মতো জেলায় আজ আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, তবে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা বর্ষণ হতে পারে। তাপমাত্রা এখানে আরও উঁচু—সর্বোচ্চ ৩২-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের উপরে।
কলকাতায় দুপুরের দিকে গরমের চাপ অনুভূত হবে, সর্বনিম্ন ২৩-২৫ ডিগ্রি। বাতাসের গতি ৮-১২ কিলোমিটার, দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে। আর্দ্রতা ৬৫-৭৫ শতাংশ, যা শহুরে এলাকায় অস্বস্তিকর করে তুলবে। উপকূলীয় জেলায়, যেমন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, সমুদ্র থেকে আসা আর্দ্র বায়ু গরমকে আরও তীব্র করতে পারে।
IMD-এর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের কাছাকাছি, কিন্তু কোনো ভারী বর্ষণের আশঙ্কা নেই। তবে, শহরবাসীদের জন্য এই গরমে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে, তাই প্রচুর জল পান করুন। যাত্রীদের জন্য, বিশেষ করে সড়কপথে, কলকাতা-দক্ষিণের হাইওয়েতে হঠাৎ মেঘলা হলে সতর্ক থাকুন।


