কলকাতা: শরৎ শেষের সঙ্গে সঙ্গে শীতের প্রথম হাওয়া বাংলার উপর দিয়ে ভেসে যাচ্ছে, কিন্তু আকাশে এখনও কিছুটা অস্থিরতা লুকিয়ে আছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-এর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, আজ উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গে সামগ্রিকভাবে শুষ্ক আবহাওয়া প্রাধান্য পাবে, তবে কোথাও কোথাও হালকা মেঘের ছায়া পড়তে পারে। সাইক্লোন ‘মন্থার অবশিষ্টাংশের প্রভাব কমে আসার পর এই পরিবর্তন এসেছে, যা অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণ হয়েছিল।
আজকের দিনে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকবে, কিন্তু সকালের কুয়াশা আর বিকেলের হালকা শীতলতা সবাইকে একটু ভিজে ভিজে ভাবাবে।উত্তরবঙ্গের কথা বললে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের মতো পাহাড়ি জেলাগুলোতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেঘলা আকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশি নাগরিক ফেরত! সূর্যোদয়ের আগেই সমাপ্ত মিশন ‘রিটার্ন টিকিট’
আইএমডি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে, যখন সর্বনিম্ন ১৪-১৬ ডিগ্রির দিকে নামবে। হিউমিডিটি ৬৫-৭৫ শতাংশের মধ্যে থাকার কারণে বাতাস একটু ভারী লাগতে পারে, বিশেষ করে টি গার্ডেন বা মালদার মতো সমতল এলাকায়। কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদায়ও হালকা বৃষ্টির ছিটেফোঁটার আশঙ্কা আছে, কিন্তু সেটা খুবই সীমিত।
পাহাড়ি রাস্তায় ভূমিধসের ঝুঁকি এখনও একটু রয়েছে, তাই যাত্রীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওয়েক-২-এর (৭-১৩ নভেম্বর) পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে কিছু দিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ এলাকার প্রভাবে হতে পারে। তবে আজকের দিনে বড় কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি; শুধু সাধারণ সতর্কবাণী।
দক্ষিণবঙ্গে, যেখানে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলো শহর জীবনের কেন্দ্রবিন্দু, সেখানে আবহাওয়া আরও স্থিতিশীল। আইএমডি-র সপ্তাহভিত্তিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নদীয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে এক-দুই জায়গায় হালকা বৃষ্টি বা বজ্রপাত হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে শুষ্কতাই প্রাধান্য পাবে।
কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২০-২২ ডিগ্রি থাকার সম্ভাবনা। বাতাসের গতি ৮-১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসবে, যা একটু শীতলতা ছড়াবে। হাওড়া বা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সকালে কুয়াশা জমতে পারে, যা ট্রাফিককে একটু ধীর করে দিতে পারে। বৃষ্টির পরিমাণ যদি হয়, তাহলে সেটা ১-২ মিলিমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
সপ্তাহের প্রথম দিকে দক্ষিণবঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টির পর এখন স্বস্তির নিশ্বাস, কিন্তু জলাবদ্ধতার অভিজ্ঞতা এখনও মনে রয়েছে অনেকের।আইএমডির বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরের উপর একটি নিম্নচাপের বিকাশ হচ্ছে, যা আন্দামান সাগরে ১ নভেম্বরের দিকে লো প্রেশার এরিয়া তৈরি করবে। এর প্রভাবে সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে আবার কিছু অস্থিরতা আসতে পারে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে।
তবে আজ এবং আগামী কয়েকদিনের জন্য বড় কোনো ঘূর্ণিঝড় বা ভারী বৃষ্টির সতর্কতা নেই। নভেম্বর মাসের মাসিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজ্য জুড়ে স্বাভাবিক বৃষ্টির পরিমাণ হবে, কিন্তু তাপমাত্রা সামান্য নিচের দিকে থাকবে। এতে শস্যক্ষেত্রে একটু উপকার হবে, কিন্তু শহুরে জীবনযাত্রায় কুয়াশা আর হালকা ঠান্ডা একটু অসুবিধা তৈরি করতে পারে।


