কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের আকাশ আজ যেন একই সঙ্গে শান্ত এবং সতর্ক। নভেম্বরের শেষভাগে শীতের আস্তরণ ধীরে ধীরে বাড়ছে, কিন্তু আজ ২৩ নভেম্বর শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণ উভয় বাংলায়ই মূলত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে বলে ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি) তার সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে। কলকাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, বর্ধমানের মতো দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, যখন সর্বনিম্ন ১৫-১৭ ডিগ্রির কাছাকাছি নামবে।
উত্তর বাংলার শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ারে একটু বেশি ঠান্ডা – সর্বোচ্চ ২৪-২৬ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১২-১৪ ডিগ্রি। বাতাসের গতি মৃদু, প্রায় ৫-১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসছে, যা শহরগুলোতে হালকা ধুলোবালি উড়িয়ে দিতে পারে। আইএমডির মতে, “আজকের আবহাওয়া স্বাভাবিক নভেম্বরের মতো – শুষ্ক, রোদেলা, কিন্তু সন্ধ্যা হলে শীতের ছোঁয়া লাগবে। কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, তবে কুয়াশা বা হালকা কুয়াশার আশঙ্কা রয়েছে সকালে।”
দক্ষিণ বাংলায় আজকের দিনটা যেন শহুরে জীবনের সঙ্গী। কলকাতায় সকাল ৬টায় সূর্যোদয় হবে, এবং দুপুরের দিকে আকাশ পরিষ্কার থাকবে। তাপমাত্রা দুপুরে ২৭ ডিগ্রি ছুঁয়ে যাবে, যা অফিস যাওয়া-আসা বা বাইরে কাজকর্মের জন্য আরামদায়ক।
কিন্তু সন্ধ্যা ৫টার পর তাপমাত্রা নেমে ১৬ ডিগ্রির কাছে চলে আসবে, এবং রাতে শীতলতা বাড়বে। আইএমডি-র সাপ্তাহিক পূর্বাভাস অনুসারে, দক্ষিণ বাংলায় গতকাল থেকে শুরু হওয়া শুষ্ক আবহাওয়া আজও অব্যাহত থাকবে, কোনো বর্ষার চিহ্ন নেই।
এলাকায় আর্দ্রতা ৭০-৮০ শতাংশের মধ্যে থাকবে, যা ত্বকে একটু আঠালো ভাব আনতে পারে, বিশেষ করে যারা অ্যালার্জির শিকার। বর্ধমান, বীরভূম, পশ্চিমবর্ধমানে কৃষকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন, কারণ শুষ্ক আবহাওয়া ফসলের ক্ষতি রোধ করবে। কিন্তু শহরবাসীরা সকালের হালকা কুয়াশার জন্য ট্রাফিক জ্যামের শিকার হতে পারেন।
আইএমডি সতর্ক করেছে, দূষণের স্তর মাঝারি থাকবে, তাই অ্যাস্থমা রোগীরা মাস্ক ব্যবহার করুন।উত্তর বাংলায় আবহাওয়া একটু ভিন্ন রূপ নিয়েছে। শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়িতে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির কাছাকাছি, কিন্তু সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি নামতে পারে, যা হিমেল স্পর্শ এনে দেবে। দার্জিলিং-এর উচ্চভূমিতে তাপমাত্রা আরও কম – ১৮-২০ ডিগ্রি সর্বোচ্চ, এবং রাতে ১০ ডিগ্রির নিচে।
আইএমডি-র উত্তর বাংলা অফিস বলছে, “শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত, কিন্তু পাহাড়ি এলাকায় হালকা কুয়াশা সকালে দৃশ্যমানতা কমাতে পারে।” চা বাগানের শ্রমিকরা সকালের ঠান্ডায় কাঁপছেন, কিন্তু দুপুরের রোদ্দুরে কাজকর্ম চলবে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে বাতাস মৃদু, কোনো ঝড়ের আশঙ্কা নেই। তবে, উত্তর বাংলার নদী-নালাগুলোতে জলস্তর স্থিতিশীল, শুষ্কতা কোনো সমস্যা সৃষ্টি করছে না। পর্যটকরা দার্জিলিং-এর টয় ট্রেনে যাত্রা করার আগে ওয়ার্ম কাপড় নিয়ে বেরোনোর পরামর্শ পাচ্ছেন।
