কলকাতা: নভেম্বরের মাঝামাঝি এসে পশ্চিমবঙ্গে শীতের আমেজটা এবার সত্যি সত্যি জাঁকিয়ে বসেছে(Weather Update)। আজ সোমবার, ১৭ নভেম্বর, উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ উভয় অংশেই আবহাওয়া থাকবে পুরোপুরি শুষ্ক। বৃষ্টি বা বজ্রবিদ্যুতের কোনো সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, পুরো রাজ্যজুড়ে শুষ্ক উত্তর-পশ্চিমি হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২-৪ ডিগ্রি নীচে নেমে গেছে।
দিনের বেলায় রোদ থাকলেও সকাল-সন্ধ্যায় শীতের অনুভূতি স্পষ্ট। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকা এবং দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশার দাপট দেখা যাবে, যা যান চলাচলে কিছুটা অসুবিধা করতে পারে।দক্ষিণবঙ্গের কথা বললে, কলকাতাসহ গাঙ্গেয় অংশে আজ আকাশ থাকবে মূলত পরিষ্কার থেকে আংশিক মেঘলা।
লাডকি বাহিন প্রকল্পে e-KYC ধাক্কা! সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জোরাল
সকালে হালকা কুয়াশা থাকলেও দুপুরের দিকে রোদ উঠবে পুরোদমে। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ১৭-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে, যা গতকালের থেকে সামান্য কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠতে পারে ২৮-২৯ ডিগ্রি পর্যন্ত। পশ্চিমের জেলা যেমন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে রাতের তাপমাত্রা আরও নীচে নামবে, ১৫-১৬ ডিগ্রি পর্যন্ত। উপকূলের দিঘা, কাঁথি, হলদিয়ায় সমুদ্রের হাওয়ার কারণে সকালে ধোঁয়াশা বেশি থাকবে, কিন্তু দিনের বেলায় আবহাওয়া থাকবে আরামদায়ক।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৪-৫ দিন দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই। বরং রাতের তাপমাত্রা আরও ১-২ ডিগ্রি কমতে পারে, যার ফলে শীতের অনুভূতি আরও বাড়বে। শহরের লোকেরা এখন সোয়েটার, শাল বের করে ফেলছেন, আর গ্রামের মানুষেরা আগুন পোহানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।উত্তরবঙ্গের ছবিটা আরও শীতল। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াংয়ের মতো পাহাড়ি এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে নেমে আসবে।
সকালে ঘন কুয়াশা থাকায় পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। টাইগার হিল বা সান্ডাকফু যাওয়ার পথে দৃশ্যমানতা কম থাকতে পারে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে হালকা কুয়াশার সঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়া।
শিলিগুড়ি, মালদা, দিনাজপুরে দিনের তাপমাত্রা ২৭-২৮ ডিগ্রি হলেও রাতে ১৪-১৬ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাবে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে শুষ্ক হাওয়ার কারণে আগামী সপ্তাহেও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে পাহাড়ে হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে উঁচু এলাকায়, যা পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পরিচালক জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে কোনো সাইক্লোনিক সার্কুলেশন বা লঘুচাপ নেই বঙ্গোপসাগরে। উত্তর ভারত থেকে শীতল হাওয়া অবাধে ঢুকছে, যার ফলে তাপমাত্রা কমছে। আগামী সপ্তাহে রাতের তাপমাত্রা আরও নামবে, দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকবে।”
তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, বাইরে বেরোলে হালকা উষ্ণ পোশাক সঙ্গে রাখতে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য। কৃষকদের জন্য সুখবর—শুষ্ক আবহাওয়া ধান কাটা ও সবজি তোলার জন্য আদর্শ। তবে সকালের কুয়াশার কারণে রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় সতর্ক থাকতে হবে।


