কলকাতা: শীতের প্রথম হাওয়ায় বঙ্গের মানুষের মনে একটা মিষ্টি আলস্য এসেছে, কিন্তু আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে হয় আজকের দিনটা শান্তিপূর্ণভাবে কাটবে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-এর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, ২২ নভেম্বর ২০২৫-এ উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গে মূলত শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করবে। কোনো বড় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, তবে দক্ষিণ বঙ্গের কয়েক জায়গায় হালকা মেঘলা আকাশ থাকতে পারে।
উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চলে সকালে হালকা কুয়াশা জমতে পারে, যা যানজটের কারণ হতে পারে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের সামনে থাকবে, কিন্তু রাতের দিকে ঠান্ডা একটু বাড়তে শুরু করবে। এই পূর্বাভাস শুধু আজকের দিনের নয়, বরং আসন্ন সপ্তাহের একটা সামগ্রিক ছবি আঁকছে, যাতে বঙ্গের মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সহজে পরিচালনা করতে পারে।
অপারেশন ট্র্যাকডাউনে কুখ্যাত গ্রেফতার ৩৮
আইএমডির কলকাতা অফিস থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গে (দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা) আজ সারাদিন শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, আর সর্বনিম্ন ১৫-১৭ ডিগ্রির আশেপাশে। পাহাড়ি এলাকায়, যেমন দার্জিলিংয়ে, সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে হালকা কুয়াশা জমতে পারে, যা দৃশ্যমানতা কমিয়ে দিতে পারে।
সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০-২২ ডিগ্রি, আর রাতে ১০-১২ ডিগ্রি নেমে আসতে পারে। এই অঞ্চলে বাতাসের গতি হালকা থাকবে, ৫-১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, এবং আর্দ্রতা ৬০-৭০ শতাংশের মধ্যে। কোনো বজার ঝুঁকি নেই, তাই চা বাগানের শ্রমিকরা এবং পর্যটকরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন। উত্তর বঙ্গের কৃষকরা বলছেন, “শুষ্ক আবহাওয়া আমাদের ধান কাটার কাজে সাহায্য করবে। কুয়াশা থাকলেও বড় সমস্যা নয়।”
দক্ষিণ বঙ্গে (কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা) পরিস্থিতি একই রকম। আজকের দিনে মূলত পরিষ্কার আকাশ থাকবে, তবে কলকাতা এবং তার আশপাশে বিকেলের দিকে হালকা মেঘ জমতে পারে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০-৩২ ডিগ্রি, আর সর্বনিম্ন ১৮-২০ ডিগ্রি। বাতাস দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে হালকা বইবে, গতি ৮-১২ কিমি/ঘণ্টা।
আইএমডি জানিয়েছে, পরবর্তী ৪-৫ দিনে ন্যূনতম তাপমাত্রায় খুব বেশি পরিবর্তন হবে না, কিন্তু শেষের দিকে একটু ঠান্ডা বাড়তে পারে। কলকাতার এক বাসিন্দা বললেন, “আজকের মতো পরিষ্কার দিনে অফিস যাওয়া সহজ। কিন্তু রাতে জ্যাকেট লাগবে।” দক্ষিণ বঙ্গের উপকূলীয় এলাকায়, যেমন ডায়মন্ড হারবার বা কাঁথি, কোনো ঝড়ের সতর্কতা নেই।এই শুষ্কতার পিছনে বঙ্গোপসাগরের অবস্থা গুরুত্বপূর্ণ।
আইএমডির এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ ফরকাস্টে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ২২ নভেম্বরের দিকে একটি লো প্রেশার এরিয়া গঠিত হতে পারে, যা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে ডিপ্রেশনে পরিণত হতে পারে। কিন্তু এটি বঙ্গের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না; বরং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ ভারতের উপকূলে বৃষ্টি বাড়াতে পারে। উত্তর বঙ্গের উইক-২ (২১-২৭ নভেম্বর) এবং দক্ষিণ বঙ্গের উইক-১ এর দ্বিতীয়ার্ধে শুষ্কতা অব্যাহত থাকবে।
তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি, যদিও উত্তর বঙ্গে ন্যূনতম তাপমাত্রা ৩-৪ ডিগ্রি উপরে থাকতে পারে। এই পূর্বাভাস মানুষকে স্বাস্থ্য সতর্কতা নিতে বলছে ঠান্ডা লাগার ভয়ে বয়স্ক এবং শিশুদের জন্য উষ্ণ কাপড় পরার পরামর্শ। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) কলকাতায় মাঝারি থাকবে, ১০০-১৫০ এর মধ্যে, যা অ্যাস্থমা রোগীদের সতর্ক করছে।
