চা শ্রমিকদের স্বস্তি, পুজোর আগে রাজ্যের বোনাস ঘোষণা

শিলিগুড়ি: পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের (Tea Garden Workers) পুজোর আগে বড় সুখবর। শুক্রবার শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে বাগান মালিক এবং ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের নিয়ে…

Tea Garden-leaf-rot-north-bengals-tea-industry-faces-losses

শিলিগুড়ি: পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের চা শ্রমিকদের (Tea Garden Workers) পুজোর আগে বড় সুখবর। শুক্রবার শ্রম দপ্তরের উদ্যোগে বাগান মালিক এবং ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের জন্য ২০ শতাংশ বোনাস দেওয়ার অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে। দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বোনাস মিটিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর রাজ্যের অ্যাডভাইজ়রিতে চা শ্রমিকদের জন্য বোনাসের হার নির্ধারণ হয়েছিল ১৬ শতাংশ। কিন্তু সেই হারে বোনাস দেওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ছড়ায় পাহাড় ও তরাই-ডুয়ার্স অঞ্চলে। শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ ছিল, বহু বাগান কর্তৃপক্ষ সেই ১৬ শতাংশ বোনাসও সময়মতো দেয়নি। এর ফলে শ্রমিক মহলে অসন্তোষ চরমে ওঠে। এবারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে শ্রম দপ্তর শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবির সঙ্গেই সুর মিলিয়ে ২০ শতাংশ বোনাস দেওয়ার সুপারিশ করল।

   

বিষয়টি নিয়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (GTA) প্রধান অনীত থাপা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “যে কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে শ্রমিকরা রয়েছেন, সেখানে ২০ শতাংশের কম বোনাস কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের মনোবল বাড়বে। আশা করি পুজোর আগে আর কোনও বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হবে না।”

অন্যদিকে, শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকেও পরিষ্কার জানানো হয়েছে, ২০ শতাংশের নীচে বোনাস তারা মেনে নেবে না। গত মাসে শ্রমিক সংগঠন ও বাগান মালিকপক্ষের বৈঠকেই এই দাবি স্পষ্ট করা হয়েছিল। পুজোর আগে শ্রমিকদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ পৌঁছে দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

Advertisements

তবে এখন প্রশ্ন উঠছে, মালিকপক্ষ এই অ্যাডভাইজ়রি মানবে কি না। কারণ গত বছরও রাজ্যের নির্ধারিত হারে বোনাস না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বহু বাগানের বিরুদ্ধে। শ্রম দপ্তরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, “রাজ্যের এই অ্যাডভাইজ়রি কার্যকর করতে মালিকপক্ষের উপর চাপ তৈরি হবে। যদি কোনও বাগান মালিক তা মানতে অস্বীকার করেন, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চা শিল্প এখনও উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ক্ষেত্র। পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স মিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষাধিক শ্রমিক সরাসরি চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবি নিয়ে আন্দোলন চলছে। এই পরিস্থিতিতে ২০ শতাংশ বোনাস দেওয়ার রাজ্য সরকারের নির্দেশ শ্রমিকদের পক্ষে বড় স্বস্তি বয়ে আনবে বলেই মনে করছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।

এখন নজর মালিকপক্ষের সিদ্ধান্তে। তারা যদি দ্রুত বোনাসের অর্থ মেটায়, তাহলে পুজোর আগে উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিতে শ্রমিক অসন্তোষ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে শ্রম দপ্তর।