দীপাবলির দিন বঙ্গের আবহাওয়ার হালচাল জানুন

west-bengal-diwali-weather-forecast-light-rain-possible-2025

কলকাতা: শরতের সোনালী আলোয় মোড়া বাংলার আকাশ আজ যেন একটু ধূসর ছায়া নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দীপাবলির উৎসবে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের লোকেরা আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছেন, আজকের দিনটা কেমন কাটবে? ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ উভয় অঞ্চলেই আংশিক মেঘলা আকাশ থাকবে, এবং কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রপাতসহ বর্ষণ হতে পারে।

Advertisements

তাপমাত্রা ২৮-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, যা সাধারণত স্বাভাবিকের কাছাকাছি। কলকাতা ও দক্ষিণ বঙ্গের শহরগুলোতে দিনের বেলা উপভোগ করা যাবে, কিন্তু সন্ধ্যা হলে মেঘের ঘনঘটা বাড়তে পারে। উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় একটু বেশি সতর্কতা দরকার, কারণ সেখানে বৃষ্টির পরিমাণ একটু বেশি হতে পারে।

আইএমডি-র কলকাতা অফিস থেকে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের উত্তরাঞ্চলে একটি চক্রাকার বায়ু প্রবাহ সক্রিয় হয়েছে, যা এই বৃষ্টির কারণ। দক্ষিণ বঙ্গে কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলোতে আজ দিনভর আংশিক মেঘলা থাকবে। সকাল ৮:৩০ থেকে পরের দিন সকাল ৮:৩০ পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা ৩০-৪০ শতাংশ।

৬০ টাকায় ইডেনে বসে দেখুন গিল-সিরাজদের ম্যাচ! কোথায় পাবেন টিকিট?

কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২৬ ডিগ্রি হতে পারে। বাতাসের গতি ১০-১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে। যদিও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই, তবু কোথাও কোথাও হঠাৎ বজ্রপাত হলে বিদ্যুতের ঝড় সতর্কতার জন্য সরকারি পরামর্শ বাইরে থাকলে গাছতলায় না দাঁড়ানো। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় যাত্রীরা একটু সাবধানে চলবেন, কারণ হালকা বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গের কথা বললে, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মতো জেলাগুলোতে আজকের আবহাওয়া একটু অপ্রত্যাশিত। আইএমডি-র পূর্বাভাস অনুযায়ী, এখানে বিচ্ছিন্নভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে, বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায়। দার্জিলিং-এ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০-২২ ডিগ্রি, কিন্তু কুয়াশা ও মেঘের কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যেতে পারে।

Advertisements

জলপাইগুড়িতে ২৮-৩০ ডিগ্রি, এবং বৃষ্টির পরিমাণ ৫-১০ মিলিমিটার হলে নদী-নালায় জল জমে যাওয়ার আশঙ্কা। সপ্তাহের দ্বিতীয় অর্ধে (১৭-২৩ অক্টোবর) উভয় অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, কিন্তু আজকের দিনটা তুলনামূলক শান্ত। তবে, চা বাগানের শ্রমিকরা এবং পর্যটকরা সতর্ক থাকুন পাহাড়ে ল্যান্ডস্লাইডের ঝুঁকি কম হলেও, ভিজে পথে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

এই আবহাওয়ার পটভূমিতে স্থানীয়রা মিশ্র অনুভূতি প্রকাশ করছেন। কলকাতার একজন অফিস কর্মী, রাহুল দাস বলেন, “শরতের শুরুতে এমন মেঘলা আকাশ দেখলে মনটা একটু ভারী হয়ে যায়। কিন্তু বৃষ্টি হলে দীপাবলির প্রস্তুতি একটু বাধাগ্রস্ত হবে। তবু, হালকা বৃষ্টি তো প্রকৃতির আশীর্বাদ!”

দক্ষিণ বঙ্গের কৃষকরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন, কারণ ধান কাটার সময় এমন বৃষ্টি ফসলের ক্ষতি না করে মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখবে। উত্তর বঙ্গের শিলিগুড়ির একজন বাসিন্দা, মিতা রায় বলেন, “পাহাড়ে মেঘ ঘুরলে সৌন্দর্য বাড়ে, কিন্তু বৃষ্টি হলে রাস্তাঘাটের যাতায়াত কষ্টকর।

আইএমডির পূর্বাভাস মেনে চলব।” আইএমডি-র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লো প্রেশার এরিয়া ১৯ অক্টোবরের দিকে আরও সক্রিয় হতে পারে, যা দক্ষিণ ভারতীয় উপদ্বীপে বৃষ্টি বাড়াবে, কিন্তু বাংলায় এর প্রভাব সীমিত থাকবে।