সবজির সেঞ্চুরি! জলপাইগুড়িতে ১০০ টাকার নিচে নেই কিছু

জলপাইগুড়ি: আজ রবিবার সকালে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বিভিন্ন বাজারে সবজির দাম হঠাৎ করেই আকাশছোঁয়া। সাধারণত বাজারে একাধিক সবজির দাম থাকে সাধারণ নাগরিকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে, তবে…

Vegetable Prices

জলপাইগুড়ি: আজ রবিবার সকালে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বিভিন্ন বাজারে সবজির দাম হঠাৎ করেই আকাশছোঁয়া। সাধারণত বাজারে একাধিক সবজির দাম থাকে সাধারণ নাগরিকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে, তবে আজ যেন বাজারে আগুন। ইন্দিরাগান্ধী কলোনি মোড় বাজার, দিনবাজার, বয়েলখেনা বাজার, স্টেশন বাজার সহ অন্যান্য বাজারগুলোতে বেশিরভাগ সবজির দাম প্রায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছেছে। প্রায় সমস্ত সবজিরই দাম ১০০ টাকার উপরে বা তার কাছাকাছি থাকায় বাজারে আসা ক্রেতারা যথেষ্ট সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।

সবজির দাম বাড়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। এসময় সাধারণত শীতকালীন সবজি বাজারে আসা শুরু হয়ে যায়, যা বাজারে সবজির দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এবছর এখনও শীতের প্রকোপ সেভাবে না পড়ায় শীতকালীন সবজির সরবরাহ খুবই কম। সেই কারণেই প্রায় সমস্ত সবজির দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে পেঁয়াজ ও কাঁচা লঙ্কার দামও ক্রমশ ১০০ টাকার সীমানায় চলে এসেছে। ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য বাজার করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে।

   

জলপাইগুড়ির ছোট ছোট বাজারগুলোতেও এই পরিস্থিতি আরও বেশি প্রকট। শহরের কেন্দ্রীয় বাজারগুলোতে সবজির দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গ্রামের দিকে ছোট বাজার ও মুদি দোকানগুলোতে পেঁয়াজ, আলু, কাঁচা লঙ্কা ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আরও বেশি। অনেক ক্রেতাই অভিযোগ করেন যে প্রশাসন মাঝে মাঝে বাজার পরিদর্শন করলেও দীর্ঘমেয়াদীভাবে দামের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে না। প্রশাসনের তরফ থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার পরে কিছু সময়ের জন্য দাম কমলেও কর্মকর্তাদের চলে যাওয়ার পরে আবার দাম বাড়তে শুরু করে।

বাজারে বিক্রেতাদেরও একরকম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের সামনে অনেক বিক্রেতা দাবি করছেন যে জিনিসের দাম কিছুটা কম হলেও, বাস্তবে একেক দোকানে একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। এমনকি, দুর্গাপূজা, কালীপূজা, ভাইফোঁটা এবং ছটপুজো শেষ হলেও সবজির দাম কমেনি বরং আরও বেড়েছে। এই অবস্থার জন্য আবহাওয়ার খামখেয়ালিকেই দায়ী করছেন বিক্রেতারা।

জলপাইগুড়ির একজন বিক্রেতা শ্যামল সরকার বলেন, “যে সময় শীতের সবজি বাজারে আসা শুরু করার কথা, সেই সময়ে বাজারে তেমন কোনো সবজির দেখা নেই। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় সবজির চাষ যথাসময়ে করা যায়নি। যার ফলস্বরূপ সবজি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে।”

সবজির এই বাড়তি দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বাজারে আসা এক মধ্যবয়সী মহিলা মিনতি রায় বলেন, “আজকাল বাজারে যেতে রীতিমত ভয় লাগছে। সবকিছু এত দামি হয়ে গেছে যে এক কেজি সবজি কিনতে গেলেই পকেটে টান পড়ে। আলু, পেঁয়াজের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনতেই এত খরচ হচ্ছে যে অন্য কিছু কেনার মতো উপায় থাকছে না।”

বাজারের এই পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে মাঝে মাঝে নজরদারি চালানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন ক্রেতারা। বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে সাধারণ মানুষ আশা করছেন। তবে প্রশাসনের তরফে কিছু না করলে এই পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।