চা শিল্পে জটিলতা, তিনটি বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের উদ্বেগ

Uncertainty Over Three Tea Gardens Leaves 3,000 Workers Struggling

আলিপুরদুয়ার (North Bengal) জেলায় তিনটি চা বাগান বন্ধ, যা ৩,০০০ শ্রমিকের জীবনকে করুণ অবস্থায় ফেলেছে। বিশেষত দলসিংপাড়া চা বাগান গত তিন মাস ধরে বন্ধ থাকলেও সরকারি খাতায় এটি এখনও খোলা আছে। ফলে শ্রমিকরা ফাউলাই ভাতা থেকে বঞ্চিত, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

Advertisements

শ্রমিকরা প্রতিদিন দিন কাটাচ্ছেন অর্ধাহারে বা প্রায় অনাহারে। তাদের পরিবারও সেই অনিশ্চয়তার শিকার। বিশেষ করে ৯৫০ জন শ্রমিক একেবারে দিশাহীন অবস্থায় দিন পার করছেন। অনিশ্চয়তা ও আর্থিক সংকট তাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রায় অসম্ভব করে তুলেছে। শ্রমিকরা জানান, বাগান বন্ধ থাকায় সাধারণ জীবনযাপন করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। “আমরা ভাত, রুটি বা অন্যান্য খাবার পেতে পারছি না। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি আমরা কিছু খুঁজে খেতে ব্যর্থ হচ্ছি,”—বলছেন এক শ্রমিক। তারা প্রায়ই আশ্রয় খুঁজে বাইরে যায়, কিন্তু বাগানের বন্ধ থাকার কারণে নিরাপদ আশ্রয় পাওয়াও কঠিন হয়ে উঠেছে।

চা বাগান বন্ধ থাকায় শুধুমাত্র মানবিক দুশ্চিন্তা নয়, প্রাকৃতিক ঝুঁকিও বাড়ছে।বাগানের কাছাকাছি চিতাবাঘ, বিষধর সাপ, হাতিসহ বন্য প্রাণীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে এই বন্ধ বাগানগুলো বেছে নিচ্ছে। ফলে শ্রমিকরা এবং তাদের পরিবারগুলো বন্য প্রাণীর আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিদিনের জীবন যাপন করছেন।

Advertisements

স্থানীয় এলাকাবাসী জানাচ্ছেন, বাগানগুলোর বন্ধ থাকা শুধুমাত্র শ্রমিকদের উপর নয়, পুরো এলাকার অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। চা বাগান বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাজারে চা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ও দোকানদাররা তাদের ব্যবসায়িক জীবনের সংকটে পড়েছেন।

বন সংরক্ষণ বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে এই সমস্যার দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, সমাজকল্যাণ সংস্থাগুলোও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে তাত্ক্ষণিক সমাধান ছাড়া শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান ভালো করা সম্ভব নয়।