নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: আগামী ৫ অগাস্ট কোচবিহারে উত্তপ্ত হতে চলেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। একদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জেলা পুলিশ সুপার দ্যুত্তিমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন, অন্যদিকে একই দিনে কোচবিহারে ১৯টি স্থানে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)।
শনিবার কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, বিজেপি রাজনৈতিকভাবে কোচবিহারে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। NRC নোটিশ পাঠিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে, যার পিছনে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্রশাসনিক চাল রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিজিৎবাবুর কথায়, “কোচবিহারে NRC সংক্রান্ত নোটিশের মাধ্যমে বিজেপি একটি মিথ্যা আতঙ্ক তৈরি করছে। এই এলাকা থেকে বিগত লোকসভা নির্বাচনে সাড়া না পাওয়ায় বিজেপি এখন বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতি করছে।”
তিনি আরও জানান, “বাংলাদেশি বা বহিরাগত তকমা দিয়ে বাঙালিদের অসম্মান করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আমরা এর প্রতিবাদে আগামী ৫ অগাস্ট কোচবিহারের ১৯টি জায়গায় অবস্থান বিক্ষোভ করব। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি এবং থাকব।”
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ওই দিন কোচবিহার সফরে আসছেন। তিনি কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুত্তিমান ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় বিজেপি বিধায়কদের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দ্বারা হেনস্থা ও আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সেই প্রসঙ্গেই এই সাক্ষাৎ, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু সাংবাদিকদের জানান, “তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পনা করেই ৫ অগাস্ট আমাদের কর্মসূচির দিনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। এটা এক ধরনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যদি ওই দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তার সম্পূর্ণ দায় তৃণমূল কংগ্রেসকে নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে বিজেপি যে দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করছে, তা থেকে দৃষ্টি সরাতে তৃণমূল NRC নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে। শুভেন্দু অধিকারীর সফর একান্তই সাংবিধানিক ও আইনত স্বীকৃত উদ্দেশ্যে হচ্ছে।”
একই দিনে দুটি রাজনৈতিক শিবিরের কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলার সাধারণ মানুষ। প্রশাসনের তরফে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশ বা বার্তা দেওয়া হয়নি।
তবে সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। এখন দেখার, ৫ অগাস্ট কোচবিহারে রাজনৈতিক উত্তেজনা কোন পথে মোড় নেয়।