অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার | আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) মহাকালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। দলের নেতা প্রবোধ দেবনাথ তার দলেরই অঞ্চল চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে, মনোরঞ্জন দাস দাবি করেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব ছিল। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৩৩ নম্বর বুথের একটি সরু রাস্তা নির্মাণ, যা নিয়ে গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
মহাকালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রসুন দেবনাথ অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল নেতা প্রবোধ দেবনাথ, বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য চিন্ময় ভৌমিক, এলাকার বাসিন্দা ডালিয়া পন্ডিত এবং আরও দুজন তার জমি দখলের চেষ্টা করছেন। এই অভিযোগে তিনি শামুকতলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। প্রসুন দেবনাথ জানিয়েছেন, তার ১১ ডেসিমেল জমিতে বাড়ি রয়েছে। তিনি রাস্তার জন্য জায়গা দিতে রাজি আছেন এবং অতীতেও দিয়েছেন, কিন্তু পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের জায়গা না নিয়ে তার উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তিনি উন্নয়নের পক্ষে থাকলেও এই জুলুমবাজি মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রবোধ দেবনাথ অভিযোগ করেছেন, অঞ্চল চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন দাসের মদতে প্রসুন দেবনাথ তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান উজ্জ্বলা রায় জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। মনোরঞ্জন দাস বলেছেন, জমি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা তিনি জানেন। তবে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ব্যক্তিগত স্তরের। পাল্টা প্রবোধ দেবনাথের নাম না করে তিনি বলেন, তিনি এই বিষয়ে পারদর্শী, তাই তার পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভব।
সোমবার দুপুরে শামুকতলা রোড ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে। অভিযোগকারী এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হলেও, পুলিশ কোনও সমাধানে পৌঁছতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, মনোরঞ্জন দাস এবং প্রবোধ দেবনাথ, দুজনেই তৃণমূল নেতা, পূর্বে একসঙ্গে কাজ করতেন। কিন্তু এখন তাদের মধ্যে ফাটল ধরেছে, যার ফলশ্রুতিতে এই বিবাদ থানায় পৌঁছেছে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে মহাকালগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা জর্জরিত। রাস্তা নিয়ে এই বিবাদ তারই বহিঃপ্রকাশ।
এই ঘটনা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। গ্রামবাসীরা দ্রুত সমাধানের আশায় প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং জমি বিবাদের এই জটিলতা কীভাবে সমাধান হয়, তা নিয়ে সকলের কৌতূহল রয়েছে।