বিজেপি বিধায়কের গ্রেফতারের দাবি তৃণমূলের

অয়ন দে, কোচবিহার: ফের উত্তপ্ত কোচবিহারের রাজনীতি। রাজু দে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার সরাসরি বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)।…

বিজেপি বিধায়কের গ্রেফতারের দাবি তৃণমূলের

অয়ন দে, কোচবিহার: ফের উত্তপ্ত কোচবিহারের রাজনীতি। রাজু দে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার সরাসরি বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। সোমবার কোচবিহার শহরে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে একটি বিশাল বাইক মিছিল সংগঠিত হয়। সেই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি সেখান থেকেই বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের গ্রেফতারের দাবি তোলেন।

সম্প্রতি কোচবিহার ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রাজু দে গুলিবিদ্ধ হন। অভিযোগ, হামলার সময় যে গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি বিজেপি বিধায়ক সুকুমার রায়ের। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই বিধায়কের এক ছেলেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সূত্রের খবর, ওই গাড়িটি বিধায়কের নিজের নামে রেজিস্টার্ড এবং তদন্তে তার নাম উঠে আসছে।

   

এই পটভূমিতেই সোমবার কোচবিহার শহরের রাস্তা চত্বর বেজে ওঠে বাইকের শব্দে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের (TMC) উদ্যোগে আয়োজিত বাইক মিছিলে অংশ নেন শতাধিক কর্মী-সমর্থক। মিছিলের শেষে জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান,

“এই ঘটনা রাজনৈতিকভাবে অশুভ বার্তা দিচ্ছে। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি যদি অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকেন, তবে তাঁকে গ্রেফতার করতেই হবে। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।” বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য,

“রাজু দে-র ওপর হামলার ঘটনায় আইন অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে। তৃণমূল এটিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। বিধায়কের গাড়ি ব্যবহৃত হয়েছে, তাই বলে তিনি অভিযুক্ত—এটা অনৈতিক অভিযোগ।”

Advertisements

কোচবিহার উত্তরের বিধায়ক সুকুমার রায় ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন। তারপর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার তৃণমূল নানা অভিযোগ তুলে এসেছে। তবে এইবার সরাসরি গ্রেফতারের দাবি তুলে উত্তাপ ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

অভিজিৎ দে ভৌমিক দাবি করেন, “রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হলে এই ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত বিধায়কদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা চাই নিরপেক্ষ তদন্ত এবং শাস্তি।”

তৃণমূল সূত্রে খবর, এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে দল। জেলার প্রতিটি ব্লকে হবে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা।

রাজু দে-র গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই বিজেপি বিধায়কের নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর আরও চড়ছে। তদন্ত কী মোড় নেয়, প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয় এবং তাতে রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়ে—সবকিছুই এখন দেখার।