উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি, পাল্টা আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা মোতায়েন পুলিশের

২১ জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসমাবেশ যখন রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রে, ঠিক সেই সময় পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে পথে নামছে বিজেপি। শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা অভিযান…

উত্তরকন্যা অভিযানে বিজেপি, পাল্টা আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা মোতায়েন পুলিশের

২১ জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে ধর্মতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসমাবেশ যখন রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রে, ঠিক সেই সময় পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে পথে নামছে বিজেপি। শিলিগুড়ির উত্তরকন্যা অভিযান (Uttarkanya March) ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এই অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পদ্ম শিবির। অন্যদিকে, বিজেপির কর্মসূচিকে ঘিরে শহর জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বলয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিজেপির মিছিল তিনবাত্তি মোড় হয়ে এগোবে উত্তরকন্যার দিকে। এই রুট ঘিরেই মোতায়েন হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে দ্বিস্তরীয় গার্ডরেল, প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বড় পুলিশ বাহিনী। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।

   

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ হাজার জন জমায়েত করতে পারবে বিজেপি। তবে এটা অভিযান নয়, মিছিল বা জনসভার আকারে করতে হবে। মিছিলের ক্ষেত্রে ১২০ থেকে ১৫০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবে না।’’ এছাড়াও, জনসাধারণের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে, সেই দিকেও কড়া নজর রাখার বার্তা দিয়েছে হাইকোর্ট।

বিজেপির তরফে যদিও বলা হয়েছে, এটি কোনও সংঘাতের কর্মসূচি নয়, বরং মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে একটি শান্তিপূর্ণ অভিযান। শুভেন্দু অধিকারী আগেই জানিয়েছেন, রাজ্যের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই উত্তরকন্যা অভিযান। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ খড়গপুরে শহিদ বিজেপি কর্মীদের স্মরণে পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করেছেন।

Advertisements

এই দুই কর্মসূচির মধ্যে উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরেই উত্তেজনার পারদ চড়েছে বেশি। কারণ, শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সদর দফতর উত্তরকন্যা, যেখানে বিজেপির যাত্রা রুখতেই প্রশাসন এখন ‘অলআউট’ মোডে। বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, উত্তরকন্যা চত্বরে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। ড্রোন নজরদারিও চালানো হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২১ জুলাইয়ের তৃণমূলের শহিদ দিবস সভাকে রাজনৈতিকভাবে ‘কাউন্টার’ করতেই বিজেপির এই পাল্টা কর্মসূচি। একই দিনে রাজ্যের দুই প্রান্তে দুই প্রধান বিরোধী নেতা—একজন দিলীপ ঘোষ খড়গপুরে, অন্যজন শুভেন্দু অধিকারী শিলিগুড়িতে—যা স্পষ্ট করে দিচ্ছে বিজেপির সংগঠন এখন আলাদা পথে একত্রে প্রচার চালাচ্ছে।

রাজনৈতিক সংঘাতের আবহে প্রশ্ন উঠছে, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ির জনজীবন কতটা প্রভাবিত হবে? পুলিশ-প্রশাসনের কড়া অবস্থানে আপাতত শহরজুড়ে তৈরি হয়েছে চাপা উত্তেজনা। তবে নিরাপত্তার বলয়ে মোড়া শহর অপেক্ষা করছে বিজেপির অভিযানের পরিণতির জন্য।