অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: শিলিগুড়ির (Siliguri) নিষিদ্ধ পল্লী এলাকায় গতকাল, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক নৃশংস হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক তরুণীর উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণের ফলে তিনি গুরুতর আহত হয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাহিল নামে এক স্থানীয় যুবক মদ্যপ অবস্থায় ওই তরুণীর উপর এলোপাথাড়ি কোপ মেরেছে, যার ফলে তরুণীর শরীরের একাধিক স্থানে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তরুণীর চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সাহিল পলাতক রয়েছে।
Read Hindi: निषिद्ध पल्ली में धारदार हथियार से हमला, युवती खून से लथपथ
খালপাড়া ফাঁড়িতে সাহিলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং পলাতক অভিযুক্তের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাহিল এর আগেও বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত ছিল। এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “সাহিলের এই নৃশংস কাণ্ড অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। রাতেই পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করেছে। হামলার কারণ খুঁজে বের করা হচ্ছে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
নিষিদ্ধ পল্লীর এক বাসিন্দা জানান, “তরুণীর চিৎকার শুনে আমরা ছুটে গিয়ে দেখি তাঁর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে এই ঘটনা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। রাতে পুলিশের টহলদারি কতটা কার্যকর, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।” এই ঘটনার পর থেকে নিষিদ্ধ পল্লী এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দারা রাতের বেলা বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সংগ্রহ করছি। সাহিলের সম্ভাব্য আত্মগোপনের স্থানগুলোতে তল্লাশি চলছে। আমরা তাকে শীঘ্রই গ্রেফতার করব এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।” তিনি আরও বলেন, এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ টহল জোরদার করা হবে।
এই ঘটনা শিলিগুড়ির নিষিদ্ধ পল্লীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি প্রকাশ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রাত্রিকালীন পুলিশ টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন। এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। তরুণীর পরিবারও দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে। পুলিশের তদন্তে এই হামলার পেছনে কোনো পূর্ব পরিকল্পনা বা ব্যক্তিগত শত্রুতা জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনা শুধু নিষিদ্ধ পল্লী নয়, গোটা শিলিগুড়ি শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। সবাই এখন অভিযুক্তের গ্রেফতারি এবং তরুণীর দ্রুত সুস্থতার জন্য অপেক্ষা করছেন।