শিলিগুড়িতে বানজারা গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, শহরজুড়ে আতঙ্ক

শিলিগুড়ির (Siliguri) পুলিশ বর্তমানে বানজারা গ্যাংয়ের কর্মকাণ্ডে বেশ সমস্যায় পড়েছে। শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরে বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রায়ই নানান অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। কখনও হাত সাফাই, আবার…

Banjara Gang's Rampant Activity Sparks Fear Across the City

শিলিগুড়ির (Siliguri) পুলিশ বর্তমানে বানজারা গ্যাংয়ের কর্মকাণ্ডে বেশ সমস্যায় পড়েছে। শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরে বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রায়ই নানান অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। কখনও হাত সাফাই, আবার কখনও মোবাইল চুরির মতো অপরাধে তাদের নাম জড়াচ্ছে। এই গ্যাংয়ের সদস্যদের কারণে শহরে অপরাধের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, শিলিগুড়ি পুলিশের কাছে বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যদের সম্পর্কে কোনো তথ্যই নেই। ফলে, তাদের আটকানো এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ শিলিগুড়ির তিনবাত্তি এলাকা থেকে পাঁচজন বানজারা মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের হেফাজত থেকে বেশ কিছু চোরাই মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, এই মহিলারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মোবাইল চুরি করতো। ধৃতদের মধ্যে কোলের শিশু সহ এক নাবালকও ছিল। এই মহিলা সদস্যরা তাদের অন্তর্বাসে মোবাইলগুলো লুকিয়ে রাখতো এবং সহজে বিক্রি করতো।

   

শিলিগুড়ির (Siliguri) ডেপুটি কমিশনার রাকেশ সিং জানিয়েছেন, ‘অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোথায় কোথায় মহিলারা চুরি করতো সে সব দেখা হচ্ছে।’ পুলিশ সুত্রে খবর, অভিযুক্তরা আসলে রাজস্থানের বাসিন্দা। তারা শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করছিল। এই গ্যাংয়ের সদস্যরা সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এসেছে। প্রথমে তারা দার্জিলিং মোড় এলাকায় বসবাস করছিল কিন্তু এলিভেটেড করিডরের কাজ শুরু হওয়ার কারণে তাদের সেখান থেকে চলে যেতে হয়। এরপর তারা ফুলবাড়ি এলাকায় একটি ফাঁকা জায়গায় নিজেদের আশ্রয় নিয়েছিল।

শিলিগুড়ি পুলিশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, শহরের এসব বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যদের সম্পর্কে কোনো তথ্য না থাকা। এ কারণে তাদের ওপর নজর রাখা বা অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এর আগেও শহরের একটি সোনার দোকানে হাত সাফাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল, যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরায় বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যদের দোকানে ঢুকে অপরাধমূলক কাজ করতে দেখা গিয়েছিল। শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকায় একটি পাঁচতারা হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে ৮০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না চুরির ঘটনার তদন্তেও বানজারা গ্যাংয়ের নাম উঠে এসেছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যরা রেকি করে এই ধরনের ঘটনা ঘটায়। তারা শহরের রাস্তার পাশে ঘর করে থাকে এবং পরে সঠিক সময় পেলে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে হানা দেয়।

এদিকে, পুলিশ এখনও এই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যরা ছড়িয়ে পড়েছে, আর তাদের অপরাধের পেছনে পরিকল্পনা থাকে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যদের সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু যেহেতু তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই, তাই তদন্ত অনেকটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি পুলিশের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। তাদের কোনো আইডেন্টিফিকেশন নেই, যার কারণে তাদের শনাক্ত করা এবং আটক করা সহজ নয়। পুলিশের দাবি, শহরে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য বানজারা গ্যাংয়ের বিষয়ে দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করা জরুরি।

যতই পুলিশ চেষ্টা করুক না কেন, বানজারা গ্যাংয়ের সদস্যরা খুবই চতুরভাবে তাদের অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের অপরাধমূলক কাজের ধরন ও পদ্ধতিও পুলিশকে ভাবাচ্ছে। শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।