পশ্চিমবঙ্গের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত টানা বর্ষণে নাজেহাল রাজ্যবাসী (Durga Puja)। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি অক্ষরেখার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গেও দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে টানা বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপুজোর আর মাত্র এক মাস বাকি থাকায়, বানভাসির আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ, পুজো উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীরা। প্রশ্ন উঠছে, এবার কি দুর্গাপুজোয় বৃষ্টি বাঙালির উৎসবের আমেজ ম্লান করবে?আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বর্তমান নিম্নচাপটি দক্ষিণ ছত্তিশগড় থেকে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত, যার প্রভাবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং নদিয়ায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
জেলা প্রশাসন নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং বেহাল বাঁধগুলির উপর নজর রাখছে।দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে পুজোর মণ্ডপ নির্মাণ, মূর্তি তৈরি এবং বাজারে কেনাকাটায় ব্যাঘাত ঘটছে।
কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটি জানিয়েছে, বৃষ্টির জন্য মণ্ডপ নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে, এবং জল জমে শ্রমিকদের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। কুমোরটুলির মূর্তিকাররা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে মূর্তি শুকানোর কাজ ব্যাহত হচ্ছে, যা পুজোর আগে মূর্তি সরবরাহে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন যে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পুজোর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কমে যেতে পারে।দুর্গাপুজোয় বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মৌসুমি বায়ু দুর্বল হতে পারে। তবে, বঙ্গোপসাগরে নতুন নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে পুজোর সময় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকে যায়।
আবহাওয়াবিদ সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুজোর সময় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, তবে হালকা বৃষ্টি বা বজ্রবিদ্যুৎ হতে পারে।” এই পূর্বাভাস সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার করলেও, বর্তমান বৃষ্টির প্রভাবে পুজোর প্রস্তুতিতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।এক্স-এ বৃষ্টি ও সম্ভাব্য বন্যা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “পুজোর আগে এমন বৃষ্টি বাংলার জন্য বিপর্যয়।
কলকাতায় আজ সকাল থেকেই কালো মেঘে ঢাকা আকাশ এবং টানা বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট জলমগ্ন। নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। অফিসযাত্রী, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং ব্যবসায়ীরা এই বৃষ্টিতে সমস্যার সম্মুখীন। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং ও কালিম্পঙে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে, এবং জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে নদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপটি ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গেলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। তবে, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। উত্তরবঙ্গে আগামী তিন দিন ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দ
ক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে, বিশেষ করে সুন্দরবন ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, উত্তাল সমুদ্রের কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
পুজোর আমেজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা।” আরেকজন লিখেছেন, “প্রশাসনের উচিত এখনই বন্যা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।” রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দুর্যোগ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রয়েছে। তবে, পুজোর আগে বন্যা পরিস্থিতি এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপের প্রয়োজন।
এশিয়া কাপের দল নিয়ে নির্বাচকদের সিদ্ধান্তে হতবাক বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার
সাধারণ মানুষ এবং পুজো উদ্যোক্তারা আশা করছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে, যাতে দুর্গাপুজোর উৎসব উদযাপনে কোনো বাধা না আসে। প্রশাসনের তৎপরতা এবং আবহাওয়ার উন্নতির উপর এখন নির্ভর করছে বাংলার পুজোর আমেজ।