কলকাতা: শীতের প্রথম হাওয়ায় বঙ্গভূমি যেন একটু একটু ঠান্ডা হয়ে উঠছে। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি এসে পড়েছে, আর আজ ১১ নভেম্বর, ২০২৫ যখন উত্তর বঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় শীতলতা বেশি, দক্ষিণের সমতলায় এখনও গরমের ছোঁয়া রয়ে গেছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের আলিপুর অফিসের সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে, কিন্তু উত্তরের কয়েকটা জেলায় হালকা কুয়াশা আর শীতের ছায়া পড়তে পারে।
দক্ষিণ বঙ্গে তো সূর্যের আলোয় দিনটা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে, যেন শহরের ব্যস্ততাকে একটা আরামদায়ক ছোঁয়া দেয়। এই আবহাওয়ার মধ্যে কলকাতার মতো শহরে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আদর্শ দিন, কিন্তু উত্তরের চা-বাগানের এলাকায় একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আসুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক আজকের আকাশের গল্প।
দক্ষিণ বঙ্গের কথা বললে প্রথমে, আলিপুরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—আজ রাজ্যের এই অংশে মূলত শুষ্ক আবহাওয়া। কলকাতায় সকাল থেকে দিনের তাপমাত্রা ২৯ থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘুরবে, আর রাতে নেমে আসবে ২১-২২ ডিগ্রির মাত্রায়। আকাশ পরিষ্কার থাকবে, সূর্যের আলো পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়বে, যা শহরের রাস্তায় একটা উষ্ণতা ছড়াবে।
বাতাসের গতি হবে ১০-১৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা হালকা হাওয়া যেন শীতের প্রথম সংকেত নিয়ে আসছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় শূন্য, মাত্র ১.৬২ মিলিমিটারের কম হালকা বৃষ্টি হলে তাও একটা দুই জায়গায়। এই আবহাওয়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদীয়া—সব জেলায় দিনটা আরামদায়ক কাটবে।
কিন্তু দুপুরের দিকে রোদ্দুরে বাইরে বেরোলে ছাতা বা টুপি মাথায় রাখুন, কারণ আর্দ্রতা ৬০-৭০ শতাংশের মধ্যে থাকবে, যা গরমকে একটু বাড়িয়ে তুলতে পারে। আলিপুর অফিসের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “দক্ষিণ বঙ্গে এখনও শরতের ছোঁয়া রয়ে গেছে, কিন্তু রাতের ঠান্ডা ধীরে ধীরে বাড়বে।” এই দিনে কলকাতার পার্কগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সেরা সময়, যেখানে পাতার রঙের খেলা এখনও চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।এবার উত্তর বঙ্গের দিকে চোখ ফেরানো যাক, যেখানে শীতের আগমন আরও স্পষ্ট।
আলিপুরের বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মতো জেলায় আজ শুষ্ক আবহাওয়া থাকলেও সকালে হালকা কুয়াশা আর শীতলতা থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা ২২-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, আর রাতে নেমে আসবে ১৪-১৬ ডিগ্রির ঠান্ডায়। পাহাড়ি এলাকায় তো শীতের ছোঁয়া আরও তীব্র, দার্জিলিংয়ে সকালে তাপমাত্রা ১২-১৪ ডিগ্রি হতে পারে, যা চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য একটু চ্যালেঞ্জিং।
বাতাসের গতি ৮-১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা, উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা ঠান্ডা হাওয়া যেন তিস্তা নদীর তীরে শীতের গান গাইছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, কিন্তু কুয়াশার জন্য দৃষ্টিসীমা কমতে পারে, বিশেষ করে সকালে শিলিগুড়ি -ডুয়ার্স লাইনে যাতায়াতকারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আলিপুর অফিসের মেটিওরোলজিস্ট মানসিংহ বলেছেন, “উত্তর বঙ্গে শীতের প্রভাব বাড়ছে, কিন্তু কোনো বড় পরিবর্তন নেই। পাহাড়ে ল্যান্ডস্লাইডের ঝুঁকি কমেছে, তবে সতর্কতা রাখুন।” এই আবহাওয়ায় চা-বাগানের দিন কাটবে শান্তিতে, কিন্তু রাতে গরম কাপড় জড়িয়ে ঘুমানোর দরকার হবে।


