শীত শেষ হতে না হতেই উত্তরবঙ্গের (North Bengal) চা বলয়ে ফের চিতাবাঘের আতঙ্ক বেড়েছে। কুয়াশার দাপট বাড়তে শুরু করেছে, আর এর সঙ্গে চিতাবাঘের হামলা নতুন করে তীব্র হয়েছে। এবারের চা মরশুমে চা চাষিদের কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এই পরিস্থিতি, এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ক্ষুদ্র চা চাষি সংগঠনের কর্তারা। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কুয়াশার দাপট আরও বাড়বে, ফলে চা শ্রমিকদের পক্ষে পাতা তোলা কঠিন হতে পারে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি, নাগরাকাটা ব্লকের আংরাভাষা গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাড়ি চা বাগানে কাজ করতে গিয়ে এক মহিলা চা শ্রমিক চিতাবাঘের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। এর একদিন আগেই মেটেলি ব্লকের বড়দিঘি চা বাগানে একই ধরনের হামলায় এক মহিলা জখম হন। এই ঘটনা নতুন কিছু নয়, গত বছরও চিতাবাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছিল চারজনের। আহত হয়েছিলেন অন্তত ২৫ জন চা শ্রমিক। এর পাশাপাশি, চলতি বছরও বেশ কিছু চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি করা হয়েছে, কিন্তু তবুও আতঙ্ক কাটছে না।
উত্তরের চা বাগান এলাকার মানুষদের মধ্যে চিতাবাঘের আতঙ্ক আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের মুন্সিবাড়ি, ভিলকুজোত, নয়নজোত, ভুষিভিটা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। গত বছর আগস্টে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির সংলগ্ন এলাকায় চিতাবাঘ ঢুকে পড়ে। আরও এক ঘটনা ঘটে ২৭ ডিসেম্বর, যেখানে ফকিরগঞ্জ গ্রামের সেহারা খাতুন নামে এক মহিলার উপর চিতাবাঘ হামলা চালায়। বিএসএফ এবং গ্রামবাসীরা তাঁকে উদ্ধার করে।
এছাড়া, খড়িবাড়ি, থানঝোরা, ফুলবাড়ি চা বাগানে অন্তত চারজন চা শ্রমিক চিতাবাঘের হামলায় আহত হয়েছেন। বন দপ্তরের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর চিতাবাঘের হামলা সবচেয়ে বেশি চা বাগান এলাকায় ঘটেছে। এখানকার চা শ্রমিক সংগঠনগুলি অভিযোগ করছে, এবারের মরশুমেও ডুয়ার্সের রামসাই, ক্রান্তি, বানারহাট, লক্ষ্মীপাড়া, সোনগাছি, মোরাঘাট, দলগাঁও, মেটেলি, তাসাটি, সিংহানিয়া, বীরপাড়া, সাইলি, বাতাবাড়ি, ভগতপুর চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের উপদ্রব বেড়েছে। সেই সাথে শিলিগুড়ির বাগডোগরার কাছে তাইপু চা বাগান, ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া, শালুগাড়া এলাকার পরিস্থিতি একই।