দার্জিলিং: উত্তরবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি অঞ্চলে ধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে। দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়ির কিছু অংশ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষত মিরিক, জোরেবাংলো, সুখিয়াপোখরি এবং ফালাকাটা অঞ্চলে ধসের তাণ্ডব সবচেয়ে মারাত্মক। এই পরিস্থিতিতে অন্তত কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে, প্রশাসনের আশঙ্কা এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দলের কর্মী এবং স্থানীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন যে এই দুঃসময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে হবে। এছাড়া ত্রাণ এবং সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। সকল স্বেচ্ছাসেবককে আহ্বান জানাই, সহমর্মিতা এবং দায়িত্ববোধের সঙ্গে সাহায্য করুন।”
It is with deep anguish that I learn of the devastation caused by incessant rainfall and landslides in Darjeeling, Kalimpong and parts of Jalpaiguri, leading to tragic loss of lives. Mirik, Jorebunglow Sukhiapokhri and Falakata have borne the heaviest brunt of this calamity.
My…
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) October 5, 2025
নবান্নও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
পরিস্থিতি অনুযায়ী, গত ১২ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে। এতে নদী ভাঙন, পাহাড়ি ধস ও বিস্তীর্ণ প্লাবন সৃষ্টি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের বহু এলাকা জলের তলায় ডুবে গেছে। পাহাড়ি পথে ধসের কারণে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। পর্যটকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
প্রশাসন এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে যুক্ত। নবান্নে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং দার্জিলিং পুলিশ হেল্পলাইনও চালু করেছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, খাবার, ওষুধ সরবরাহ এবং বিপর্যস্তদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
পর্যটক এবং সাধারণ জনগণকে প্রশাসন সতর্ক করেছে। পাহাড়ি রাস্তা চলাচলের জন্য সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণ করুন এবং আতঙ্কিত হবেন না।
উত্তরবঙ্গের এই বিপর্যয় প্রমাণ করে, প্রকৃতির ক্রোধ কতটা অপ্রত্যাশিত হতে পারে। তবে সরকারের তৎপরতা, দলীয় কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব। আশা করা যাচ্ছে, সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং নিরাপদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রুত পুনর্বাসন সম্ভব হবে।