একদিকে জলপাইগুড়ির দামদিম এ বন্যপ্রাণী নিগ্রহের ঘটনা, পাশাপাশি বনপ্রান দপ্তরের নতুন উদ্যোগ। এবার দত্তক নেওয়া যাবে গোরুমারার কুনকি প্রজাতির হাতি। তার জন্য আছে কিছু নিয়ম, পকেট থেকে খরচ করতে হবে টাকাও। চারিদিকে এখন বন্যপ্রাণী হত্যা, তাদের উত্তক্ত করার ঘটনা সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগ উদ্যোগ নিয়েছে বন্যপ্রানীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করার।
কি এই কুনকি হাতি?
কুনকি হাতি হলো প্রশিক্ষিত হাতি, যেগুলো বন দপ্তরের কাজকর্মে সহায়তা করে। এই হাতিগুলি সাধারণত বন্য হাতি তাড়ানো, জঙ্গলের টহলদারি, পর্যটন ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ধার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক ও লাগোয়া চোপড়া, চিলাপাতা, জলদাপাড়া, এবং বাকসা অঞ্চলে বর্তমানে বেশ কয়েকটি কুনকি হাতি রয়েছে। এই মুহূর্তে গোরুমারায় কুনকি হাতির সংখ্যা ২৭টি রয়েছে শাবকও।
যাঁরা হাতি দত্তক নেবেন, তাঁদের জন্য থাকছে বিশেষ কিছু সুবিধা যেমন বন দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রশংসাপত্র ও স্বীকৃতি, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক ভ্রমণের বিশেষ অনুমতি, দত্তক নেওয়া হাতির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও ছবি তোলার সুযোগ। তবে, দত্তক নেওয়া মানে হাতিকে ব্যক্তিগতভাবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া নয়, বরং হাতির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।
নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে করতে হবে দত্তকের আবেদন, এবং পূর্ণ বয়স্ক হাতির জন্য বছরে ব্যায় করতে হবে বছরে ২লক্ষ ২০হাজার টাকা। সাব অ্যাডাল্ট হাতিদের জন্য খরচ হবে বছরে ১ লক্ষ্য ৯০ হাজার টাকা আর শাবকদের জন্য খরচ হবে ১ লক্ষ্য ৪০ হাজার টাকা। বন দপ্তরের এই উদ্যোগ পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। গরুমারা ও জলদাপাড়ায় প্রতিবছর বহু পর্যটক আসেন, বিশেষত শীতকালে। কুনকি হাতির দত্তকগ্রহণ প্রকল্প চালু হলে পর্যটকদের মধ্যে বন্যপ্রাণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে এবং তাঁরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন। বন দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষ সরাসরি হাতিদের দেখাশোনার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। এটি শুধু দান নয়, বরং প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতার এক সুন্দর দৃষ্টান্ত।”