Bangla Pokkho: দ্বিতীয় AIIMS এর দাবিতে জলপাইগুড়ির রাস্তায় বাংলা পক্ষর বিরাট মিছিল

নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: “বিহারে দুটি, উত্তরপ্রদেশে তিনটি, তাহলে বাংলায় একটি AIIMS কেন?” — এই প্রশ্নকে সামনে রেখেই রবিবার জলপাইগুড়ি শহরের বুকে একটি বৃহৎ প্রতিবাদ মিছিলে অংশ…

Bangla Pokkho: দ্বিতীয় AIIMS এর দাবিতে জলপাইগুড়ির রাস্তায় বাংলা পক্ষর বিরাট মিছিল

নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: “বিহারে দুটি, উত্তরপ্রদেশে তিনটি, তাহলে বাংলায় একটি AIIMS কেন?” — এই প্রশ্নকে সামনে রেখেই রবিবার জলপাইগুড়ি শহরের বুকে একটি বৃহৎ প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিল আঞ্চলিক সংগঠন বাংলা পক্ষ (Bangla Pokkho)। সংগঠনের দাবি, উত্তরবঙ্গের জন্য দ্বিতীয় AIIMS প্রয়োজন, এবং সেই AIIMS স্থাপন করতে হবে জলপাইগুড়ির দোমোহনিতে, যেখানে রেলের ৪০০ একরেরও বেশি পরিত্যক্ত জমি পড়ে রয়েছে।

এই জমি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ হওয়ায় জমি অধিগ্রহণের কোনও সমস্যা থাকবে না বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। বাংলা পক্ষের (Bangla Pokkho) বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গ উপেক্ষিত ও বঞ্চনার শিকার। এমন একটি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এই অঞ্চলে তৈরি হলে উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।

   

এই মিছিল থেকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানানো হয় বিজেপির উত্তরবঙ্গের ছয় সাংসদের বিরুদ্ধে। বাংলা পক্ষ অভিযোগ তোলে, “মালদা উত্তর থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত ছয়টি আসনে বিজেপি সাংসদ রয়েছেন। তাঁরা দিনের পর দিন ‘উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত’ বলে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করলেও, বাস্তবে কেন্দ্রীয় কোনও প্রকল্প আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি দিল্লিতে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপ দিতেও ব্যর্থ।”

বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায় এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সঙ্গে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি, শীর্ষ পরিষদ সদস্য রজত ভট্টাচার্য, আব্দুল লতিফ, জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক অভিষেক মিত্র মজুমদার, শিলিগুড়ি জেলার সম্পাদক গিরিধারী রায় ও আলিপুরদুয়ার জেলার সম্পাদক উত্তম দাস প্রমুখ।

Bangla Pokkho: দ্বিতীয় AIIMS এর দাবিতে জলপাইগুড়ির রাস্তায় বাংলা পক্ষর বিরাট মিছিল

গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাংলা পক্ষ দাবি করছে না, দাবি জানাচ্ছে না—বাংলা পক্ষ দাবি আদায় করবে। উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্রদের গণদাবি হল জলপাইগুড়ির দোমোহনিতে দ্বিতীয় AIIMS স্থাপন। এই দাবি কেন্দ্র মানতেই হবে।”

Advertisements

তিনি আরও বলেন, “এই দাবির পিছনে আমাদের যৌক্তিকতা আছে। এখানে রেলের পরিত্যক্ত জমি রয়েছে, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি, এবং দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার প্রভৃতি জেলার সাধারণ মানুষকে কলকাতায় ছুটতে হয়। একটা AIIMS হওয়ায় চাপ সামাল দেওয়া যায় না। তাই দ্বিতীয় AIIMS এখন সময়ের দাবি।”

বাংলা পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই দাবিতে আন্দোলন জোরদার হবে। ভবিষ্যতে দিল্লি অভিযান সহ বৃহত্তর আন্দোলনের পরিকল্পনা রয়েছে। সংগঠনের দাবি, উত্তরবঙ্গের মানুষ শুধু ভোট দিতে জানেন না, নিজেদের অধিকারের দাবিতেও একজোট হতে জানেন।

এই মিছিলে নানা বয়সের মানুষ, ছাত্র, যুবক-যুবতী থেকে প্রবীণ নাগরিকরাও অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পোস্টার, ব্যানার, যেখানে লেখা — “দ্বিতীয় AIIMS চাই, বঞ্চনা আর নয়”, “জলপাইগুড়ি AIIMS এর উপযুক্ত জায়গা” ইত্যাদি স্লোগান।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলায় শুধুমাত্র একটি AIIMS রয়েছে (কল্যাণীতে), যা দক্ষিণবঙ্গের বহু অংশের মানুষের উপকারে এলেও, উত্তরবঙ্গ এখনও উন্নত চিকিৎসার পরিকাঠামোর দিক থেকে বঞ্চিত।

বাংলা পক্ষের এই আন্দোলন আদৌ কেন্দ্রীয় সরকারকে নড়াচড়া করাতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই দাবি যে প্রবল জনসমর্থন পেয়েছে, তা আজকের মিছিল প্রমাণ করে দিল।