উত্তরবঙ্গ, ৭ অক্টোবর: উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ফের একবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করার প্রবণতার তীব্র সমালোচনা করলেন। সম্প্রতি রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি এলাকায় ধস, নদীতে জলস্ফীতি ও সেতু ভেঙে পড়ার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এই প্রেক্ষিতে রাজনীতির ময়দানে একাংশের বক্তব্যকে কটাক্ষ করেই মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে শোনা গেল ক্ষোভ।
মমতা বলেন, “মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও বলা হচ্ছে সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছে। অন্য রাজ্যেও প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে। আমরা তা নিয়ে রাজনীতি করি না।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই ধরণের ঘটনাগুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং মানবিকতার দিক থেকে দেখাই উচিত। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এই দুর্দিনেও রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন, যা একেবারেই অনুচিত।
রাজ্যের একাধিক জেলায় বর্ষার জেরে নদী উপচে পড়েছে, বহু এলাকা জলমগ্ন। পাহাড়ি জেলাগুলিতে ধসের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জায়গায় সেতু ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রশাসন দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জন্য আর্থিক সাহায্য ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে আমরা মানুষের পাশে থাকি। প্রশাসন, সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী— সবাই মিলে কাজ করছে। কিন্তু কেউ কেউ চেয়ারে বসে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছেন, যেটা একেবারেই অনভিপ্রেত।”
প্রতিবছর বর্ষাকালে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু সম্প্রতি যে সেতুটি ভেঙে পড়েছে, সেটি নিয়ে একাধিক রাজনৈতিক নেতার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের একাংশ এই ঘটনাকে রাজ্যের অব্যবস্থা ও ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজনীতি করতে হলে সংসদে, বিধানসভায় করুন। কিন্তু যখন মানুষ বিপদে আছে, তখন তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে দোষারোপ করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও অভিযোগ করেন, দেশের অন্যান্য রাজ্যে যখন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, তখন সেইসব ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেই যদি কিছু হয়, তাহলে বিরোধীরা প্রশ্ন তোলে, দোষারোপ করে এবং রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করে। তিনি বলেন, “দুর্যোগ তো সারাদেশেই হচ্ছে। হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র— কোথাও কি সেতু ভাঙছে না? মৃত্যুর খবর কি নেই? তাহলে শুধু বাংলা নিয়ে এত কুৎসা কেন?”