রেলের জমিতে অবৈধ ছাদ ভাঙা, মাধ্যমিক পরীক্ষার আগের দিনই খোলা আকাশের নিচে প্রস্তুতি পরীক্ষার্থীর!

এখন রাত পেরোলেই মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik 2025) , কিন্তু তার আগেই আলিপুরদুয়ারের একটি দৃশ্য যা রাজ্যজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সেখানকার পরীক্ষার্থীরা শীতে খোলা আকাশের…

Madhyamik 2025: Controversy Arises as Students in Alipurduar Face Hardships Due to Roof Demolition Following Rail Notice

এখন রাত পেরোলেই মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik 2025) , কিন্তু তার আগেই আলিপুরদুয়ারের একটি দৃশ্য যা রাজ্যজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সেখানকার পরীক্ষার্থীরা শীতে খোলা আকাশের নিচে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং উদ্বেগজনক। একদিকে শীতের প্রকোপ, অন্যদিকে রেলের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত ছাদ ভেঙে দেওয়া, এই অবস্থায় পরীক্ষার্থীরা কীভাবে তাদের প্রস্তুতি নেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আলিপুরদুয়ারের ঘটনাটি মূলত রেলের জমিতে বসবাসকারী অবৈধ বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্কিত। দীর্ঘদিন ধরে রেলের জমিতে বসবাসকারী অনেকেই আবাস যোজনার আওতায় এসে, নতুন ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ পেয়েছিলেন। কিন্তু, রেলের পক্ষ থেকে উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়ার পর, তারা বাধ্য হয়েছেন তাদের নির্মাণাধীন ঘরের ছাদ ভেঙে ফেলতে। এই অবস্থায়, মাটি ও কাঠের কংক্রিটের স্থানে ছাদহীন ঘরের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের। বিশেষ করে, যারা আবাস যোজনার উপভোক্তা, তারা এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

   

চন্দনা সাহানী, যিনি উত্তর-জিতপুরের বাসিন্দা, তার কাছে পুরনো ঘর ভেঙে, নতুন কাঠামো তৈরি করতে টাকা পেয়েছিলেন। তবে, রেলের বাধায় তাকে তার নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে। এখন, তিনি এবং তার মেয়েকে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের তলায় পড়াশোনা করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি, বিশেষত মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রাক্কালে, অত্যন্ত অস্বস্তিকর এবং হতাশাজনক।

এছাড়া, ভোপাল দাস ও তার স্ত্রী মনি দাসের মতো অনেকেই রয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বসবাস করছেন। তারা আবাস যোজনার টাকা পেয়ে নিজেদের নতুন বাড়ি নির্মাণের আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু রেলের বাধায় তাদের পরিকল্পনা ব্যাহত হয়েছে। এখন তারা বিপদে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে, সাধারণ মানুষ অভিযোগ করেছেন যে, জেলা প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের দ্বিচারিতা তাদের দুর্দশার কারণ।

এ বিষয়ে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন যে, জেলা প্রশাসন নিজেরা সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ ভাঙছে, অথচ রেলের জমিতে রাজ্য সরকারের প্রকল্প বাস্তবায়নে উৎসাহিত করছে। এদের মতে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র।

তবে, আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল দাবি করেছেন যে, রেল গরিব মানুষের উপর অত্যাচার করছে। তিনি বলেন, মূখ্যমন্ত্রী বাংলার আবাস প্রকল্পের টাকা দিয়েছেন, যাতে দরিদ্র মানুষদের ঘর তৈরি করতে সাহায্য করা যায়, কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করছে।

রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে, এই পরিস্থিতি দেশের দরিদ্র জনগণের জন্য একটি গুরুতর সংকট তৈরি করেছে। তারা আশা করছে, শীঘ্রই এই সমস্যা সমাধান হবে, যাতে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে পেতে পারে।