অয়ন দে, কোচবিহার: মেখলিগঞ্জ (Cooch Behar) ব্লকের উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ১৬৮ ধুলিয়া বলদিয়া হাটি মসজিদ পাড়ার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে একটি কালভার্ট নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁদের এই ন্যায্য দাবির প্রতি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কোনো গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার সাধারণ মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, এই পথটি গ্রামে প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। বর্ষাকালে এই পথে জল জমে যাওয়ায় যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনকি সাধারণ দিনেও এই পথে চলাচলের সময় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বাসিন্দাদের। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যার সমাধানের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার আবেদন জানানো হলেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলি বলেন, “এই পথ দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। স্কুলে যাওয়া শিশু থেকে বয়স্ক মানুষ, সবাই এই পথের উপর নির্ভরশীল। বর্ষাকালে পথে জল জমে গেলে আমাদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। আমরা বারবার পঞ্চায়েত ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছি, কিন্তু কেউ আমাদের কথায় কান দেয়নি।”
এলাকার আরেক বাসিন্দা রেহানা বেগম জানান, “এই পথে একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হলে আমাদের সমস্যা অনেকটাই কমে যেত। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে আমরা শুধু প্রতিশ্রুতি শুনে আসছি। এখন আর আমরা অপেক্ষা করতে চাই না।” স্থানীয়দের বক্তব্য, এই পথটি কেবল তাঁদের দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্যই নয়, বরং কৃষি কাজ, বাজারে যাওয়া এবং জরুরি পরিষেবার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পথের বেহাল দশার কারণে তাঁরা নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা এখন কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, যদি অবিলম্বে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু না হয়, তবে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। স্থানীয় যুবক আব্দুল রহিম বলেন, “আমরা আর ধৈর্য ধরতে পারছি না। প্রশাসন যদি আমাদের দাবি না মানে, তবে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব। এটা আমাদের অধিকার।”
এদিকে, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানিয়েছেন, এই বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ এই কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো সময়সীমা তাঁরা জানাতে পারেননি। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করছেন, প্রতিশ্রুতির বাইরে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁদের আস্থা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বাড়ছে। এখন দেখার বিষয়, দীর্ঘদিনের এই বঞ্চনার পর প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করেন। এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু না হলে তাঁরা আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই পারে এলাকার শান্তি ও স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে।