কালিম্পং: সোমের সকালে ফের ধস (Landslide) নামল ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে (NH-10)। শিলিগুড়ি-সিকিম সংযোগকারী এই গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ি রাস্তায় আচমকাই বিপর্যয়। কালিম্পং জেলার বাঘপুলের কাছে একটি যাত্রীবাহী গাড়ির উপর গড়িয়ে পড়ল বড় পাথরের চাঁই। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন গাড়িতে থাকা চালক ও যাত্রীরা। দুর্ঘটনার জেরে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে যান চলাচল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে কালিম্পং থেকে শিলিগুড়ির দিকে একটি ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি রওনা দেয়। বাঘপুলের কাছাকাছি পৌঁছতেই আচমকাই পাহাড়ের একাংশ ভেঙে নেমে আসে। পাথরের চাঁই এসে পড়ে গাড়ির উপর। বড় বিপদের সম্ভাবনা থাকলেও গাড়িচালকের তৎপরতায় দ্রুত সকল যাত্রী গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। ফলে কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সেবক ফাঁড়ির পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে রাস্তা থেকে সরানোর কাজ শুরু হয়। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজরদারি শুরু করেছে। এই মুহূর্তে ওই অংশে সম্পূর্ণভাবে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রাস্তায় প্রচুর কাদামাটি, পাথরের টুকরো জমে রয়েছে। ফলে পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা খোলার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই টানা বৃষ্টি চলছে পাহাড়ে। তার জেরেই পাহাড়ের মাটি আলগা হয়ে এই ধস (Landslide) বলে অনুমান। মৌসম ভবন (IMD) আগেই সতর্ক করেছিল যে, উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘটনার পর পর্যটকদের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা গাড়ি নিয়ে সিকিম, কালিম্পং বা দার্জিলিংয়ের দিকে যাচ্ছেন, তাঁদের পাহাড়ি রাস্তায় সাবধানে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর জানিয়েছে, রাস্তায় মাটি ও পাথর পরিষ্কারের কাজ পুরোদমে চলছে। তবে আবহাওয়ার উন্নতি না হলে কাজ ব্যাহত হতে পারে। কালিম্পং প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা আপাতত পর্যটকদের ওই রাস্তায় যাতায়াত না করার পরামর্শ দিচ্ছি। পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত সতর্ক থাকা জরুরি।”
এই সড়ক শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার একমাত্র প্রধান রাস্তা হওয়ায় পর্যটন এবং স্থানীয় মানুষের যাতায়াতে বিরাট প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে, গ্যাংটকগামী বাস ও গাড়ি চালকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকেই এখন বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা করছেন, যদিও পাহাড়ি রাস্তাগুলোর অধিকাংশই খারাপ আবহাওয়ার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এই ধস আবারও পাহাড়ি রাস্তায় যাতায়াতের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আবহাওয়ার অবনতি থাকলে আগামী কয়েকদিন এই ধরনের বিপর্যয় আরও বাড়তে পারে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পর্যটকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।