জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) চা বলয় ঘিরে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হল। মাটিয়ালি সমবায় সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক ছাতার তলায় এল সিপিআইএম, বিজেপি ও কংগ্রেস। তৃণমূল প্রার্থী না দেওয়ায়, রবিবার অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় কোনও ভোটাভুটি ছাড়াই বোর্ড গঠন করে নেয় এই বিরোধী জোট।
Read Hindi: चाय बेल्ट में एक नाव पर वाम, कांग्रेस और बीजेपी! तृणमूल हुई गायब
উত্তর ধুপঝোড়ার অফিসে সাধারণ সভায় গঠিত হয় ৬ সদস্যের একটি যৌথ প্যানেল। ভোটের কোনও প্রয়োজনই পড়েনি। কারণ তৃণমূল কোনও প্রার্থী দেয়নি। বোর্ড গঠনের পর সমিতি চত্বরে উৎসবের আবহ—লাল ও গেরুয়া আবিরে মেতে ওঠেন সমর্থকরা।
বিজেপির প্রাক্তন সমতল মণ্ডল সভাপতি মজনুল হক বলেন, “এই বোর্ড শাসক দলের বিরোধী শক্তির মিলিত প্রয়াস। তৃণমূল কোনও প্যানেলই দিতে পারেনি, এটা প্রমাণ করে যে জনগণের মনোভাব বদলাচ্ছে। মানুষ বিকল্প খুঁজছে, আর সেই জায়গায় আমরা জোট করে সামনে এসেছি।”
সিপিএম নেতা দীনেশ রায় বলেন, “এটা নিছক রাজনৈতিক সমঝোতা নয়। এই জোট কার্যত কৃষকদের স্বার্থে একত্রিত হয়েছে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত সম্মিলিত ভাবেই নেওয়া হবে।”
একই বক্তব্য কংগ্রেস-সমর্থিত সদস্য সফিরউদ্দিন আহমেদেরও। তাঁর মতে, “এই বোর্ড কেবল প্রতীকী নয়, এটা ভবিষ্যতের রূপরেখা। যেখানে তৃণমূলের একাধিপত্যের বিকল্প তৈরি হচ্ছে।”
তবে তৃণমূল এই পুরো প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলেই দাবি করছে। মাটিয়ালি ব্লক তৃণমূল সভানেত্রী স্নোমিতা কালান্দি অভিযোগ করেন, “এই সাধারণ সভার কথা অধিকাংশ সদস্যকেই জানানো হয়নি। পুরো বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ম বহির্ভূত। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন সমবায় দফতরে জানাচ্ছি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অনির্বাণ ঘোষের মতে, “এই বোর্ড নির্বাচন তৃণমূলের জন্য একটা বড় বার্তা। যেখানে তাদের প্রার্থীই দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেখানে বিরোধী জোট শক্তি হয়ে উঠছে। রাজ্যের অন্যান্য এলাকায়ও এর প্রভাব পড়তে পারে।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। মাটিয়ালির মতো ছোট একটি সমবায়ে এমন জোট সাফল্য বৃহত্তর রাজনীতিতে বিরোধীদের জন্য দিশা দেখাতে পারে বলেই মত অনেকের।