ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ভস্মীভূত হোশিয়ারী কারখানা

শান্তনু পান, পশ্চিম মেদিনীপুর: ভাইফোঁটার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের (Kolaghat fire) ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা নাগাদ কোলাঘাট থানার অন্তর্গত কুমারহাট গ্রামে একটি হোশিয়ারী কারখানায় আগুন লেগে মুহূর্তের মধ্যে পুরো কারখানাটি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়।

Advertisements

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকাল সকাল তারা ধোঁয়া দেখতে পান এবং দ্রুত ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, হাতে থাকা জল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরপর খবর দেওয়া হয় দমকল ও কোলাঘাট থানার পুলিশকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের দুটি ইঞ্জিন এবং পুলিশ। প্রায় দুই ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টায় দমকল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে ততক্ষণে পুরো কারখানাটি ছাই হয়ে যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই হোশিয়ারী কারখানাটি স্থানীয় কুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা নানু ঘড়ার মালিকানাধীন। ভাইফোঁটা উপলক্ষে সেই দিন কারখানায় ছুটি থাকায় কোনো শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন না। ফলে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটেনি। তবে সম্পূর্ণ কারখানা, মজুত কাপড় ও যন্ত্রপাতি পুড়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকারও বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে।

দমকল আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে শর্ট সার্কিটের ফলেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের মতে, উৎসব উপলক্ষে বাজি ফাটানোর ফলে কোনো ফুলকি ছিটকে কারখানায় পড়ে আগুন লেগে থাকতে পারে। সবদিক খতিয়ে দেখছে কোলাঘাট থানার পুলিশ।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত দমকল কর্মীরা জানান, “আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, প্রথমে আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়ে। ভিতরে প্রচুর সুতোর গাঁট, প্রস্তুত পোশাক, তেলজাত দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি থাকায় আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।”

Advertisements

হোশিয়ারী মজদুর ইউনিয়নের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উপদেষ্টা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, “এই কারখানাটি এলাকায় বহু বছর ধরে চালু ছিল। আগুনে সমস্ত কিছুই ছাই হয়ে গিয়েছে। মালিক ও শ্রমিক উভয়েই বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হলেন।”

কোলাঘাট থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিটের দিকেই ঝুঁকছে তদন্ত। বাজির ফুলকির বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।”

অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা কুমারহাট গ্রামে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। উৎসবের দিনে এমন দুর্ঘটনায় এলাকার পরিবেশ শোকাহত হয়ে পড়ে। বর্তমানে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশ ঘিরে তদন্ত চালাচ্ছে এবং দমকল বিভাগ ক্ষতির হিসেব তৈরি করছে।