কোচবিহার এনবিএসটিসি গ্যারেজে আগুন, ক্ষতিগ্রস্ত বাস, তদন্তে পুলিশ

কোচবিহার, ৫ নভেম্বর: উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার গ্যারেজে (NBSTC Bus Garage) একটি বাসে আগুন লাগার ঘটনায় আজ সকালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পরিবহন সংস্থার…

Fire Erupts at Cooch Behar NBSTC Bus Garage

কোচবিহার, ৫ নভেম্বর: উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার গ্যারেজে (NBSTC Bus Garage) একটি বাসে আগুন লাগার ঘটনায় আজ সকালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পরিবহন সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রথম অবস্থায় বাসে আগুন দেখতে পান এবং দ্রুত দমকলকে খবর দেন। বাসটি গ্যারেজে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল, ফলে আশেপাশে থাকা অন্যান্য যানবাহনগুলিতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

দ্রুত পদক্ষেপে দমকলের কাজ শুরু
খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কোচবিহার দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। দমকল কর্মীরা দ্রুত কাজ শুরু করে এবং প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে ততক্ষণে বাসটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। আশেপাশে থাকা অন্যান্য যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও ঘটনাটি গ্যারেজের কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়।

   

প্রাথমিক তদন্তে আগুনের কারণ শট সার্কিট বলে অনুমান
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, শট সার্কিট থেকেই এই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। বাসটি বহুদিন ধরে গ্যারেজে পড়ে ছিল এবং ইলেকট্রিক্যাল ত্রুটি থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে দমকল বিভাগ। তবে, আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে আরও তদন্তের প্রয়োজন। পরিবহন সংস্থার কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাহায্যে এক বিস্তারিত তদন্ত চালানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পুলিশের উপস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
দমকল কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরে কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা প্রাথমিক তদন্তে সম্ভাব্য ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, এ ধরনের আগুনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য ভবিষ্যতে গ্যারেজের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পরিবহন কর্তৃপক্ষকে সচেতন হতে বলা হয়েছে।

ক্ষতির পরিমাণ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত বাসটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য নয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। যদিও অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে, তবে আগুনে একটি সম্পূর্ণ বাসের ক্ষতি হওয়ায় পরিবহন সংস্থার বড় আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। পরিবহন কর্তৃপক্ষ এই বাসের পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণ এবং গ্যারেজে নিয়মিত তদারকির বিষয়ে পরিকল্পনা করছে।

বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা গ্যারেজ এলাকায় ভিড় জমাতে শুরু করেন। আগুনের ভয়াবহতা দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাসিন্দারা জানান, “আমরা প্রথমে ধোঁয়া দেখতে পাই এবং পরে প্রচুর শব্দ শুনতে পাই। এমন দুর্ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বাস গ্যারেজের সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি প্রয়োজন।”

অতীতেও ঘটেছে এমন দুর্ঘটনা
উল্লেখ্য, এর আগেও এই পরিবহন সংস্থার বিভিন্ন গ্যারেজে এমন শট সার্কিট বা ইলেকট্রিক্যাল ত্রুটিজনিত কারণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পরিবহন কর্তৃপক্ষ এখন এইসব গ্যারেজে ইলেকট্রিক সিস্টেমের উন্নতির বিষয়ে পরিকল্পনা করছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
সতর্কতার বার্তা পরিবহন সংস্থার

পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মীদের ভবিষ্যতে এমন ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে ও রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে নির্দেশ দিয়েছে।