অয়ন দে, আলিপুরদুয়ার: বুধবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের কার্তিকার জঙ্গল সংলগ্ন রাজ্য সড়কে এক দল হাতির আবির্ভাবে চাঞ্চল্য ছড়ায়। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা হাতির দলটি রাজ্য সড়কের উপর দাঁড়িয়ে পড়ে, ফলে কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল ও সাধারণ মানুষের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের মতে, এই দলে শাবক-সহ বেশ কয়েকটি হাতি ছিল। হাতির দলটি দেখতে এলাকায় ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বন বিভাগের কর্মীরা। তবে, কিছুক্ষণ পর হাতির দলটি রাস্তা পার হয়ে জঙ্গলে ফিরে যায়, এবং রাজ্য সড়কে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতির দলটি রাস্তার উপর বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। তবে, তারা কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি। এই ঘটনা এলাকায় সাময়িক আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও বড় ধরনের কোনও বিপত্তি ঘটেনি। বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং হাতির দলটির গতিবিধির উপর নজর রাখেন। স্থানীয়দের মতে, এই এলাকায় হাতির চলাচল নতুন কিছু নয়। প্রায়ই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হাতির দল লোকালয়ের কাছাকাছি চলে আসে, বিশেষ করে খাবারের সন্ধানে।
আলিপুরদুয়ার জেলায় হাতি-মানুষ সংঘাত একটি গুরুতর সমস্যা। গত কয়েক মাসে জেলার বিভিন্ন অংশে হাতির আক্রমণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাতির খাদ্যসংকট এবং তাদের চলাচলের পথে বাধার কারণে এই ধরনের ঘটনা বেড়ে গেছে। কার্তিকার জঙ্গল এলাকা হাতির চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডোর। তবে, জঙ্গলের কাছাকাছি মানুষের বসতি এবং কৃষি কার্যক্রমের কারণে হাতিরা প্রায়ই লোকালয়ে প্রবেশ করে।
বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, “হাতির দলটি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছিল, সম্ভবত খাবারের খোঁজে। আমরা স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলেছি এবং হাতির গতিবিধির উপর নজর রাখছি।” তিনি আরও বলেন, হাতির চলাচলের জন্য বিশেষ করিডোর তৈরির পরিকল্পনা চলছে, যাতে এই ধরনের ঘটনা কমানো যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতির দলটি রাস্তায় দাঁড়ানোর সময় কেউ কেউ ভিডিও ও ছবি তুলেছেন। তবে, বন বিভাগ সতর্ক করে দিয়েছে যে হাতির কাছাকাছি যাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। এই ঘটনার পর এলাকায় হাতির চলাচল নিয়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। বন বিভাগ এলাকাবাসীদের জঙ্গলের কাছাকাছি না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
এই ঘটনা আলিপুরদুয়ারে হাতি-মানুষ সংঘাতের সমস্যাকে আরও একবার সামনে এনেছে। বন বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্যা সমাধানে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে।