দামদিমে হাতি উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে আর্থমভার চালক গ্রেপ্তার

পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার দামদিমে হাতি উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে এক অটোমোভার চালককে গ্রেপ্তার করেছে বন বিভাগ ও স্থানীয় পুলিশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে বনের মধ্যে ঢুকে হাতিদের উত্যক্ত করছিলেন এবং গাড়ির হর্ন বাজিয়ে ও আলো ফেলে তাদের বিরক্ত করছিলেন।বন বিভাগের সূত্র জানায়, অভিযুক্ত চালক প্রায়ই বনাঞ্চলের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করতেন এবং সেখানে হাতিদের উত্ত্যক্ত করতেন। সম্প্রতি, একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে যেখানে দেখা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতির দিকে উজ্জ্বল আলো ফেলছেন এবং উচ্চ শব্দ করে তাদের সেখান থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

Advertisements

বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, “বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণীদের বিরক্ত করা গুরুতর অপরাধ। এটি শুধুমাত্র হাতিদের জন্য নয়, স্থানীয়দের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।” বিশেষজ্ঞদের মতে, হাতিদের উত্ত্যক্ত করলে তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে, যা মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে প্রায়ই হাতির চলাচল লক্ষ্য করা যায় এবং মানুষ ও হাতির সংঘাতের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, সম্প্রতি দামদিম এলাকায় বন্য হাতির হামলায় একাধিক ফসলের ক্ষেত ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী হাতি আতঙ্কে রয়েছেন, কারণ উত্ত্যক্ত হলে হাতির দল আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ভারতের বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন, ১৯৭২ অনুযায়ী, বন্যপ্রাণীকে উত্ত্যক্ত করা বা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বন বিভাগ জানিয়েছে যে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। অভিযুক্ত কে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত এ রাখা হয়েছে।

Advertisements

বন দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা জনগণকে সচেতন করছি যাতে তারা বন্যপ্রাণীদের উত্ত্যক্ত না করেন। এটি শুধু আইনের লঙ্ঘন নয়, এটি হাতিদের জীবনও ঝুঁকির মুখে ফেলে।” স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, হাতিদের চলাচলের পথে মানুষের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও উত্ত্যক্তকরণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। এক গ্রামবাসী বলেন, “আমাদের এলাকায় হাতির চলাচল স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের উত্ত্যক্ত করে, যার ফলে হাতিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমরা চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক।” বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে হাতিদের উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করতে হবে। দামদিমের এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রকৃতির সাথে সহাবস্থান নিশ্চিত করা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরি। বন বিভাগ ও প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে।