অয়ন দে, উত্তরবঙ্গ: শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের রবিবার সকালটা যেন একেবারেই অন্যরকম ছিল। সকাল থেকেই ওয়ার্ডের অলিগলি ঘুরে বেড়ালেন শিলিগুড়ির ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার (Deputy Mayor Ranjan Sarkar)। তবে এদিন তাঁর হাতে ছিল না কোনও সরকারি নথি বা পরিদর্শনের ফাইল। বরং তাঁর হাতে ছিল দীঘার বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ।
দীঘার জগন্নাথ দেবের প্রসাদ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার এই অভিনব উদ্যোগে খুশি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ। প্রসাদের সঙ্গে মিলল ডেপুটি মেয়রের (Deputy Mayor Ranjan Sarkar) আন্তরিকতা এবং মানবিক স্পর্শ।
ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার (Deputy Mayor Ranjan Sarkar) জানান, ‘‘অনেকেই দীঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়ার সুযোগ পান না। অনেকেই শারীরিক অসুস্থতা বা আর্থিক কারণে দীঘায় যেতে পারেননি। তাঁদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’’
রবিবার সকালে রেশন ডিলারদের সহযোগিতায় শুরু হয় এই প্রসাদ বিতরণ কর্মসূচি। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত চলতে থাকে এই কার্যক্রম। এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে নিজে হাতে প্রসাদ তুলে দেন ডেপুটি মেয়র (Deputy Mayor Ranjan Sarkar)।
প্রসাদ হিসেবে ছিল খিচুড়ি, লাড্ডু, এবং শুকনো প্রসাদের প্যাকেট। স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে হাসিমুখে তুলে দেন রঞ্জন সরকার। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথাও বলেন তিনি (Deputy Mayor Ranjan Sarkar)। অনেক প্রবীণ বাসিন্দা ডেপুটি মেয়রের এই মানবিক উদ্যোগে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা পার্থ সেন বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে এমন উদ্যোগ আগে কখনও দেখিনি। বাড়িতে বসেই জগন্নাথ দেবের প্রসাদ পেয়ে খুব ভালো লাগছে।’’
অন্যদিকে, বৃদ্ধা বাসিন্দা সরস্বতী দত্ত বলেন, ‘‘আমার বয়স হয়েছে, এত দূর দীঘায় যেতে পারি না। রঞ্জন বাবুর জন্যই আজ আমি বাড়িতে বসে জগন্নাথের প্রসাদ পেলাম।’’
ডেপুটি মেয়র (Deputy Mayor Ranjan Sarkar) আরও জানান, ‘‘এই কর্মসূচির মাধ্যমে এলাকাবাসীর সঙ্গে আরও গভীর সম্পর্ক তৈরি হবে। এটা শুধুই প্রসাদ বিতরণ নয়, এটা মানুষের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধন গড়ে তোলার একটি ছোট্ট প্রচেষ্টা।’’
এলাকার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এই উদ্যোগে সহযোগিতা করেছে। তারা রেশন ডিলারদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দ্রুত প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে। প্রসাদ বিতরণ চলাকালীন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দিকেও নজর রাখা হয়। সবাইকে মাস্ক পরার এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়।
এলাকাবাসীর প্রশংসা পেয়ে খুশি ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার (Deputy Mayor Ranjan Sarkar)। তিনি বলেন, ‘‘এটা শুরু মাত্র। ভবিষ্যতে আরও এরকম সামাজিক ও মানবিক উদ্যোগ নিতে চাই।’’
প্রসঙ্গত, দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের কাছেই অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। তাই সেই প্রসাদ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে এক বিশেষ আনন্দের সঞ্চার হয়েছে।
এদিনের এই উদ্যোগ যে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের মন ছুঁয়ে গেছে, তা বলাই বাহুল্য। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে ডেপুটি মেয়রের (Deputy Mayor Ranjan Sarkar) এই কাজের প্রশংসা করেছেন। কেউ কেউ লিখেছেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি মানে এটাই।’’ শিলিগুড়ির অন্যান্য ওয়ার্ডেও আগামী দিনে এরকম উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানা গেছে।