দার্জিলিং: পাহাড়ে পর্যটন শিল্পকে আরও প্রসারিত করতে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার তিনি মিরিকের পথে পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শনকালে সুখিয়াপোখরি থেকে পশুপতি ফটকের রাস্তা পর্যন্ত এক অপরূপ স্থান দেখতে পান, যা তিনি ‘দ্বিতীয় লামাহাটা’ হিসেবে ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই নতুন পর্যটন কেন্দ্র স্থানীয়দের বিকল্প আয়ের সুযোগ তৈরি করবে এবং পর্যটকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা আনবে।
২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি পর্যটন শিল্পকে শক্তিশালী করার গুরুত্ব বোঝেন। তখনই দার্জিলিং থেকে কালিম্পং যাওয়ার পথে লামাহাটার পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আজ লামাহাটা দার্জিলিংয়ের অন্যতম ব্যস্ত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। হোম স্টে কনসেপ্ট চালু হওয়ায় স্থানীয়রা পর্যটকদের আতিথেয়তা করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এলাকা পরিদর্শনকালে বলেন, “সুখিয়া থেকে মিরিক যাওয়ার পথে নতুন পর্যটন কেন্দ্র হবে, যা লামাহাটার মতোই জনপ্রিয় হবে। আমি এলাকা দেখেছি। পর্যটকরা এখানে ছবি তুলতে আসবেন। নতুন পর্যটন কেন্দ্র এক বছরের মধ্যে চালু হবে। এখানে হোম স্টে সুবিধা থাকবে। স্থানীয়রা নতুনভাবে রোজগার করতে পারবেন।”
নতুন এলাকা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরা। একদিকে ঘন পাইন বন, অন্যদিকে বিস্তৃত চা বাগান এবং আকাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার শ্বেতশুভ্র চূড়া দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। পর্যটন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন পর্যটন কেন্দ্র শুধু পর্যটকদের আকর্ষণ করবে না, স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ স্থানীয় পর্যটন শিল্পের জন্য নতুন প্রেরণা হবে। হোম স্টে ব্যবস্থা স্থানীয়দের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করবে এবং পর্যটকদের জন্য আরও নান্দনিক অভিজ্ঞতা তৈরি করবে। পর্যটকরা এখানে স্থানীয় সংস্কৃতি, খাবার এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
দার্জিলিং পর্যটন দফতর জানিয়েছে, নতুন পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। রাস্তা, হোটেল, হোম স্টে সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত পরিমাণে নিশ্চিত করা হবে, যাতে পর্যটকরা আরাম ও নিরাপত্তার সঙ্গে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ‘দ্বিতীয় লামাহাটা’ লামাহাটার মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে দার্জিলিংকে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে পরিচিত করবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ শুধু পর্যটন নয়, স্থানীয়দের জন্য অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং পাহাড়ের স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও বহন করে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে এই নতুন পর্যটন কেন্দ্র চালু হবে, হোম স্টে সুবিধাসহ পর্যটকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করবে। এটি দার্জিলিং পর্যটন মানকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাবে এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা মানুষদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে।