সিকিম: উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চল জুড়ে ফের প্রবল বিপর্যয়। গত কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টির (Darjeeling Flooded) কারণে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার উপর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক ১০ নম্বরের একাধিক জায়গায় তিস্তার জল উঠে এসেছে। নদীর খরস্রোতা রূপে আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষজন ও যাত্রীরা।
সিকিমে প্রবল বৃষ্টির জেরে একাধিক স্থানে ধস নেমেছে। পশ্চিম সিকিমে ধসের কবলে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে। উত্তর সিকিমের রিং খোলা এলাকায় রবিবার ভোরে একটি বড় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যাতে আপার জঙ্গুর রাস্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে ফিদাং ও সাংক্লাংয়ের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বহু গাড়ি আটকে পড়েছে, যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে।
দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের বিভিন্ন এলাকায়ও ছোট বড় ধস নেমে চলেছে। যদিও জাতীয় সড়ক ১০ নম্বর এখনও সরাসরি ধসে আটকায়নি, তবে তিস্তার জল সড়কের উপর দিয়ে বইতে শুরু করায় যান চলাচলে সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চালকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিস্তায় বিপদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নদীর জলস্তর দ্রুত বাড়তে থাকায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক। পাশাপাশি মহানন্দার জলও ফুলেফেঁপে উঠছে। দুই নদীরই প্রবল স্রোত পাহাড়ি অঞ্চলের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা এই পরিস্থিতিতে নতুন করে সমস্যায় পড়েছেন। পুজোর আগে দার্জিলিং ও সিকিমের পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যায়। কিন্তু জাতীয় সড়ক বন্ধ হলে বা ধস নামলে ভ্রমণ একেবারে থমকে যাবে। এতে পর্যটন শিল্পে বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের মত।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণে মাটি দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে বারবার ধসের ঘটনা ঘটছে। উত্তর সিকিমে যেভাবে ধস নামছে, তাতে আগামী দিনে আরও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রশাসন ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আটকে পড়া যাত্রীদের সাহায্যের চেষ্টা চলছে। জাতীয় সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দ্রুত মেরামতির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে আবহাওয়ার পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তবে পাহাড়ে যাতায়াতে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সার্বিকভাবে, দার্জিলিং ও সিকিমে টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ। নদী ও ধস—দুটোই একসঙ্গে বিপদ ডেকে আনছে। পর্যটন, পরিবহন, স্থানীয় জীবনযাত্রা সবকিছুই এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে।