কোচবিহারে পঞ্চবটি হনুমান মন্দিরের শুভ দ্বারোদ্ঘাটন

অয়ন দে, কোচবিহার: কোচবিহারের স্টেশন চৌপথিতে আজ মঙ্গলবার বহু প্রতীক্ষিত পঞ্চবটি হনুমান মন্দিরের (Panchbati Hanuman Temple) দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এই নবনির্মিত মন্দির ঘিরে স্থানীয়…

Cooch Behar Panchbati Hanuman Temple Opens with Grand Ceremony

অয়ন দে, কোচবিহার: কোচবিহারের স্টেশন চৌপথিতে আজ মঙ্গলবার বহু প্রতীক্ষিত পঞ্চবটি হনুমান মন্দিরের (Panchbati Hanuman Temple) দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। এই নবনির্মিত মন্দির ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহ ও আনন্দের কোনও কমতি নেই। বিশেষ পূজা, হোম যজ্ঞ এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই শুভ মুহূর্ত উদযাপিত হয়েছে, যা এলাকার আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

একসময় কোচবিহার স্টেশন মোড়ে পঞ্চবটি বটগাছের নীচে একটি ছোট্ট হনুমান মন্দির ছিল, যা স্থানীয়দের কাছে আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে, রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য সেই মন্দিরটি অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দা ও আয়োজক কমিটির উদ্যোগে নতুনভাবে একটি আধুনিক ও সুসজ্জিত মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এই উদ্যোগের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছেন কোচবিহার পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎ দে ভৌমিক, যিনি আয়োজক কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নির্মাণের প্রতিটি ধাপে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।

   

সোমবার মন্দির চত্বর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি মন্দিরের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন এবং শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিশ্চিত করেন। তাঁর নেতৃত্বে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় এই মন্দিরটি একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। মন্দিরটি কেবল ধর্মীয় গুরুত্বই বহন করে না, বরং এটি কোচবিহারের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও একটি প্রতীক হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দ্বারোদ্ঘাটন উপলক্ষে আজ সকাল ১১টায় বিশেষ পূজা ও হোম যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় প্রসাদ বিতরণ এবং ভজনের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান আরও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। অভিজিৎ দে ভৌমিক সকলকে এই শুভ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “পঞ্চবটি হনুমান মন্দির কোচবিহারের বাসিন্দাদের জন্য একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল হবে। আমরা সকলের সহযোগিতায় এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছি।”

স্থানীয় বাসিন্দারা এই মন্দিরকে কোচবিহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে দেখছেন। হিন্দু শাস্ত্রে পঞ্চমুখী হনুমানকে শক্তি, ভক্তি এবং সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ সাহা বলেন, “এই মন্দির আমাদের এলাকার জন্য গর্বের বিষয়। এখানে পূজা করতে এসে মন শান্তি পায়। আমরা আশা করি, এটি ভবিষ্যতে আরও বড় আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হয়ে উঠবে।”

Advertisements

মন্দির কমিটির এক সদস্য জানান, পঞ্চবটি হনুমান মন্দিরের নির্মাণে স্থানীয়দের আর্থিক ও শ্রমের অবদান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, মন্দিরের নকশা ও স্থাপত্যে ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক উপাদানের সমন্বয় করা হয়েছে, যা এটিকে আরও আকর্ষণীয় করেছে। মন্দির চত্বরে পঞ্চবটি বটগাছের উপস্থিতি এই স্থানকে আরও পবিত্র ও শান্তিময় করে তুলেছে।

এই দ্বারোদ্ঘাটন অনুষ্ঠানে কোচবিহারের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা উপস্থিত হয়েছেন। স্থানীয়দের মতে, এই মন্দির শুধু ধর্মীয় কেন্দ্রই নয়, বরং সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তুলবে। অনেকে মনে করছেন, পঞ্চবটি হনুমান মন্দির খুব শীঘ্রই কোচবিহারের একটি উল্লেখযোগ্য তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিতি পাবে।

এই অনুষ্ঠানের সফলতার জন্য আয়োজক কমিটি এবং স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশংসিত হয়েছে। মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের মধ্য দিয়ে কোচবিহারে একটি নতুন আধ্যাত্মিক যাত্রার সূচনা হল, যা আগামী দিনে এলাকার সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।