কোচবিহারে ফের বাম শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের হিড়িক

অয়ন দে, কোচবিহার: কোচবিহারের (Cooch Behar) রাজনৈতিক মানচিত্রে ফের একবার বড়সড় ধাক্কা খেল বামফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুটকাবাড়ি অঞ্চলের দুধেরকুঠি দেওয়ানবস এলাকায় সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে…

Cooch Behar Left Front Faces Defections as Families Join Trinamool Congress in Sutkabari

অয়ন দে, কোচবিহার: কোচবিহারের (Cooch Behar) রাজনৈতিক মানচিত্রে ফের একবার বড়সড় ধাক্কা খেল বামফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুটকাবাড়ি অঞ্চলের দুধেরকুঠি দেওয়ানবস এলাকায় সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন ১০টি পরিবার। এই যোগদান কর্মসূচির পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি সাধারণ সভাও অনুষ্ঠিত হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের হাত ধরে এই যোগদান সম্পন্ন হয়। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে নতুন সদস্যদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। এর ঠিক একদিন আগে, বুধবার সন্ধ্যায়, একই অঞ্চলে বামফ্রন্ট ছেড়ে ৩০টি পরিবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিল। এই ঘটনাগুলি কোচবিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

Advertisements

এদিনের যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, “মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নমূলক কাজে আস্থা রাখছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্যের সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছেছে, যা সাধারণ মানুষের মনে ভরসা জাগিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “বামফ্রন্ট ও বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে মানুষ আর ভরসা রাখছে না। তাই তারা জোড়া ফুলের পতাকা তলে আসছেন।”

   

শুধু বামফ্রন্ট নয়, বিজেপি শিবিরেও ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি তুফানগঞ্জের ২ নম্বর ব্লকের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দলবদলের এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। তাদের মতে, সাধারণ মানুষ এখন তৃণমূলের উন্নয়নের রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

সুটকাবাড়ি অঞ্চলে টানা দুই দিনের এই যোগদান কর্মসূচি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমিতাভ রায় বলেন, “আমাদের দল সবসময় গ্রামের মানুষের পাশে থেকেছে। তাদের সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই যোগদান প্রমাণ করে যে মানুষ আমাদের উপর ভরসা রাখছেন।”

অন্যদিকে, বামফ্রন্ট নেতৃত্ব এই দলবদলের ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। স্থানীয় সিপিএম নেতা প্রকাশ বর্মন বলেন, “কিছু মানুষ স্বার্থের জন্য দল ছাড়তে পারেন, কিন্তু আমাদের আদর্শের ভিত্তি শক্ত রয়েছে। আমরা জনগণের সঙ্গে থেকে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।”

কোচবিহার জেলায় দলবদলের এই ধারা আগামী ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং বামফ্রন্ট ও বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা এই অঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন দিক নির্দেশ করছে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তৃণমূলের এই সাংগঠনিক তৎপরতা জেলায় তাদের শক্তি আরও বাড়াবে। তবে বামফ্রন্ট ও বিজেপি কীভাবে এই ধাক্কা সামলায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।