অয়ন দে, কোচবিহার: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের আরেকটি চেষ্টা ব্যর্থ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার শীতলকুচি ব্লকের গাদোপোতা সীমান্ত দিয়ে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। বিএসএফের সতর্ক নজরদারি ও তৎপরতার কারণে তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এই ঘটনা সীমান্তে নিরাপত্তার গুরুত্ব এবং বিএসএফের কঠোর পাহারার প্রমাণ বহন করে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে গাদোপোতা সীমান্তের ২১ নম্বর গেটের কাছে কাঁটাতারের ওপারে পাঁচজন বাংলাদেশি নাগরিককে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে দুজন মহিলা এবং দুটি শিশু ছিল বলে জানা গেছে। তাঁরা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন বেড়া পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের জন্য। বিএসএফের জওয়ানরা তাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেয় এবং তাদের ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশে বাধা দেয়। এই ঘটনায় কেউই ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি।
ঘটনার পর বিএসএফ ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মধ্যে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা করে। জানা গেছে, ওই পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের পরিচয় ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে তদন্ত চলছে। বিএসএফ জানিয়েছে, এই ধরনের ঘটনা রোধে সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বিএসএফের তৎপরতায় তারা স্বস্তি পেয়েছেন। একজন বাসিন্দা, অমিত রায়, বলেন, “সীমান্তে বিএসএফের কঠোর নজরদারি না থাকলে এই ধরনের ঘটনা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারত। আমরা তাদের দ্রুত পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞ।” সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় কোচবিহারে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টা প্রায়ই ঘটে। তবে বিএসএফের সতর্কতার কারণে এই ধরনের ঘটনা বেশিরভাগ সময়ই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
বিএসএফের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই ধরনের ঘটনা রোধে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। স্থানীয়দেরও সজাগ থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।” এই ঘটনার পর সীমান্তে অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে এবং নজরদারির জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
এই ঘটনা কোচবিহারের সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তার গুরুত্ব আরও একবার তুলে ধরেছে। গত কয়েক মাসে বিএসএফ কোচবিহারে একাধিক অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসেও গাদোপোতা সীমান্তে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই ঘটনাগুলি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়। স্থানীয়রা আশা করছেন, বিএসএফ ও বিজিবির সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে কমে আসবে।