ডালখোলা: উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলায় ফের নারী নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। সোমবার বিকেলে স্কুলে পড়তে যাওয়া এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির (Molestation) অভিযোগ উঠেছে স্কুলেরই এক নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ক্ষুব্ধ জনতা থানার সামনে বিক্ষোভ করে এবং অভিযুক্তের দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
জানা গিয়েছে, দশ বছর বয়সী ওই ছাত্রী স্কুলে গিয়েছিল ডায়েরি আনতে। সেই সময় স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী তাকে একা পেয়ে জড়িয়ে ধরে (Molestation)। শিশুটির মা বলেন, “মেয়ে বারবার বলেছে ‘কাকা, ছাড়ো’, কিন্তু অভিযুক্ত শোনেনি। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে।”
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকার বাসিন্দারা এবং অভিভাবকরা স্কুলে হাজির হন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এরপর থানার সামনে জনতা জমায়েত হয় এবং অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।
এই ঘটনায় ক্রুদ্ধ জনতা অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুরো দোকানটি দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে। পাশাপাশি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, যা অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। তবে স্কুল পরিচালন সমিতির এক সদস্য বলেন, “প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছিল। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।”ডালখোলার স্থানীয় বিধায়ক মিনহাজুল আজাদ জানান, “এই ঘটনা খুবই লজ্জাজনক। আমি ঘটনাটি শুনেই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দোষী যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় তা নিশ্চিত করব।”
এই ঘটনার আগে সম্প্রতি কলকাতার কসবা এলাকার একটি কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তারপরে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলেও নাবালিকাকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠে আসে। এখন ডালখোলায় ফের শিশুকন্যার উপর শ্লীলতাহানির ঘটনা রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
ডালখোলার এই ঘটনা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা দুর্বল, তা ফের প্রমাণ করল। শিশুদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাই যদি অপরাধে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে অভিভাবকদের আস্থা কোথায় থাকবে?