কোচবিহার: ফের রাজনৈতিক ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা সামনে এলো কোচবিহারে (Clash in Cooch Behar)। এবিভিপি (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ) অভিযোগ করেছে, বুধবার তাদের ছাত্র সমাবেশকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সদস্যরা রাসমেলা ময়দানে রাখা গাড়ি এবং বাইকে পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুর চালায়। ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার শহরের জেনকিন্স স্কুল মোড়ে।
জানা গেছে, এদিন কোচবিহারে এবিভিপির একটি পূর্বনির্ধারিত ছাত্র সমাবেশ ছিল। সকাল থেকেই মিছিল শুরু হয় জেনকিন্স স্কুল চত্বর থেকে। সেই মিছিল শুরুর আগে সংগঠনের বেশ কয়েকটি গাড়ি ও বাইক রাসমেলা ময়দানে রাখা হয়। অভিযোগ, মিছিল বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সুযোগ নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য এসে ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলিতে হামলা চালায়।
একজন গাড়িচালক জানান, প্রথমে বাইকে করে দুজন যুবক আসে এবং হুমকি দিয়ে যায়, এরপর আবার ফিরে আসে আরও চার-পাঁচজন, যারা দুটি মোটরসাইকেলে ছিল। তারপর তারা একের পর এক গাড়ির সামনে কাঁচ ভেঙে দেয় এবং এলাকা ছেড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক দীপ্ত দে এ বিষয়ে বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বারবার আমাদের উপর আক্রমণ করছে। এর আগেও আমরা ডিএম অফিস অভিযান কর্মসূচি চলাকালীন একই ধরনের হেনস্তার শিকার হয়েছিলাম। আজ ফের তারা আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। যদি তৃণমূলের সাহস থাকে, তবে সামনাসামনি মোকাবিলা করুক, পেছন থেকে আক্রমণ করে কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে।”
এই ঘটনায় এবিভিপি কোচবিহার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের শীঘ্রই শনাক্ত করা হবে।
তবে, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাদের দাবি, এবিভিপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। টিএমসিপির কোচবিহার জেলা সভাপতি বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ছাত্র রাজনীতি করি। এবিভিপি নিজেরাই নিজেদের মধ্যে গাড়ি নিয়ে মারামারি করে এখন আমাদের নাম জড়াচ্ছে। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে কোচবিহার শহরে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ছাত্র রাজনীতির অঙ্গনে ফের সংঘর্ষ নতুন করে অশান্তি ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে রাজ্যজুড়ে যেখানে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির প্রভাব নিয়ে বিতর্ক চলছেই, সেখানে এই ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
এদিকে এবিভিপির তরফে জানানো হয়েছে, তারা এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে কোচবিহার জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাবে।