অয়ন দে, কুমারগ্রাম: উত্তরবঙ্গের কুমারগ্রাম বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক (BJP MLA) মনোজ কুমার ওরাও এবং বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে৷ এই ঘটনায় দুইজন CISF সদস্য আহত হন এবং তিনজন মহিলা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিধায়ক মনোজ কুমার ওরাও ত্রাণ বিতরণের জন্য উপস্থিত ছিলেন। ত্রাণ বিতরণকালে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আচমকাই উগ্র আচরণ শুরু করে। তাদের হাতে লাঠি, দড়ি ও অন্যান্য বস্তু থাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উপস্থিত সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ছুটতে থাকে।
ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছানো নিরাপত্তাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তবে দুই CISF সদস্য আহত হন এবং স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে তিনজন মহিলা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণের পর অবজারভারে রাখা হয়েছে।
হামলার সময় দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বিধায়ক মনোজ কুমার ওরাও গম্ভীরভাবে আহত হননি, তবে নিরাপত্তা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে সময় কাটিয়েছেন। বিজেপি পার্টির স্থানীয় নেতৃত্ব এই হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন।
উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। তবে এমন সহিংসতা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
বিধায়ক মনোজ কুমার ওরাও সাংবাদিকদের জানান, “আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ বিতরণ করেছি। অথচ কিছু অসাধু ব্যক্তি হামলা চালিয়েছে। আমরা আইনের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল এবং পুলিশকে সহযোগিতা করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেন, “ত্রাণ বিতরণে এমন সহিংসতা অনুমোদনযোগ্য নয়। আশা করি রাজ্য সরকার দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে।”
বিজেপি পার্টি ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে মামলা দায়ের করেছে এবং ঘটনার পূর্ণ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত সংবেদনশীল। মানুষ রাজনৈতিক সহিংসতা থেকে মুক্তি চাচ্ছে, বিশেষ করে দুর্যোগের সময় যখন তারা ত্রাণ ও সাহায্যের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকে।
প্রসঙ্গত, বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে গিয়ে সোমবার আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপির শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ। শংকর ঘোষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁদের পাশে দাঁড়াতে নাগরাকাটায় পৌঁছান। ঠিক সেই সময় হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী তাঁর গাড়ির উপর ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে। মুহূর্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিধায়কের গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়, আশেপাশের গাড়িগুলিতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপি কর্মীরাও রেহাই পাননি৷
একই সঙ্গে বিজেপি সাংসদ খগেন মূর্মূও একই ঘটনায় আক্রান্ত হন। তাঁর গাড়িতেও পাথরবৃষ্টি চলে বলে অভিযোগ। বিজেপির পক্ষ থেকে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক হিংসা সৃষ্টি করে সাহায্যের কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করেছে শাসকদল।