কলকাতা: শীতের প্রথম ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়ায় বঙ্গের আকাশ আজ শনিবার (৮ নভেম্বর, ২০২৫) একটু ধূসরতা নিয়ে ঢাকা, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বড় ধরনের দুর্যোগের আভাস নেই। ভারতীয় আবহাওয়া অফিস (আইএমডি) তাদের সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে, উত্তর বাংলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কিছু জায়গায়, যখন দক্ষিণ বাংলায় আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি সীমিত থাকবে।
এই পূর্বাঞ্চলীয় আবহাওয়া প্যাটার্নের পিছনে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ এবং উত্তরাঞ্চলীয় পশ্চিমবায়ুর মিশ্রণ কাজ করছে, যা গত সপ্তাহের ভারী বৃষ্টির পর একটা অল্প স্বস্তির সংকেত দিচ্ছে। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করুন—যাত্রীদের জন্য সকাল-বিকেলের মেঘলা আবহাওয়ায় দৃষ্টিসীমা কমতে পারে, এবং কৃষকদের জন্য মাটির আর্দ্রতা বাড়ার কারণে ফসলের যত্ন নেওয়া দরকার।
SIR ইস্যুতে বঙ্গ-বিজেপি সংগঠনের গাছাড়া ভুমিকা তুলে ‘বিস্ফোরক’ তথাগত
আসুন, আইএমডির এই পূর্বাভাসের ভিত্তিতে উত্তর ও দক্ষিণ বাংলার আজকের আবহাওয়ার একটা বিস্তারিত ছবি তুলে ধরি, যাতে আপনার দিনপ্রবর্তন সহজ হয়।উত্তর বাংলায় আজকের আবহাওয়া একটু অনিশ্চিত। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং পূর্ব বা পশ্চিম বর্ধমানের উত্তরাংশে আইএমডি হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা জানিয়েছে।
সকাল থেকে মেঘের আবরণ বাড়বে, এবং বিকেল-সন্ধ্যায় কোথাও কোথাও বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬-২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১৮-২০ ডিগ্রির মধ্যে থাকবে, যা গতকালের তুলনায় ১-২ ডিগ্রি কম। বায়ুর গতি ১০-১৫ কিমি/ঘণ্টা, কিন্তু বৃষ্টির সময় ২০-২৫ কিমি/ঘণ্টা হাওয়া বইতে পারে, যা পাহাড়ি এলাকায় ল্যান্ডস্লাইডের ছোট ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। দার্জিলিংয়ের মতো উচ্চভূমিতে কুয়াশের সম্ভাবনা বেশি, যা যাত্রাদের জন্য সতর্কতার কারণ।
গত সপ্তাহের সাইক্লোন ‘মনথা’র প্রভাব এখনও লেগে আছে, যা টিস্টা, তর্শা, রাইডাক এবং জলধাকা নদীর জলস্তর স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে, কিন্তু কৃষকরা চা বাগান এবং ধানক্ষেত্রে জলাবদ্ধতার জন্য সজাগ থাকুন। আইএমডির রিজিওনাল মেট্রোলজিক্যাল সেন্টার (কলকাতা) বলছে, এই বৃষ্টি পশ্চিমবায়ুর প্রভাবে, যা পরের দু’দিনও চলতে পারে। স্থানীয়রা বলছেন, “এবারের শীত একটু তাড়াতাড়ি এসেছে, কিন্তু বৃষ্টি না থাকলে ভালো হতো।”
দক্ষিণ বাংলার আকাশ আজ আরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে, তবে মেঘের ছোঁয়া এড়াতে পারবে না। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূমে হালকা মেঘলা আবহাওয়া, কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৯-৩১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ২০-২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের কাছাকাছি। কলকাতায় সকালে কুয়াশা থাকতে পারে, কিন্তু দুপুরে রোদ বেরোবে, বিকেলে মেঘ বাড়বে।
বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ৮-১২ কিমি/ঘণ্টা বইবে, যা উদ্ভিদের জন্য ভালো। আইএমডির সাত দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ বাংলায় বৃষ্টির পরিমাণ কম, কিন্তু উত্তরের প্রভাবে কলকাতায় ১-২ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। গতকালের তুলনায় আজ অধিক আর্দ্রতা (৭০-৮০ শতাংশ) থাকবে, যা অ্যাস্থমা রোগীদের জন্য অসুবিধা তৈরি করতে পারে। শহুরে যাত্রীরা মনে রাখবেন, সকালের ট্রাফিকে কুয়াশার কারণে ধীরগতি।
কৃষকদের জন্য ভালো খবর—শুষ্ক আবহাওয়ায় সেচের চাপ কমবে, কিন্তু পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার মতো শুষ্ক জেলায় ধুলোবালির সমস্যা থাকতে পারে।আইএমডির এই পূর্বাভাসের ভিত্তি বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ এবং জাতীয় আবহাওয়া মডেলের উপর। সর্বশেষ বুলেটিনে (৭-১৩ নভেম্বর) উল্লেখ করা হয়েছে, উত্তর বাংলায় আইসোলেটেড লাইট টু মডারেট রেইন, যখন দক্ষিণে পার্শিয়ালি ক্লাউডি স্কাই।
সাইক্লোন ‘মন্থার’ অবশিষ্টাংশ এখনও উত্তরাঞ্চলে প্রভাব ফেলছে, কিন্তু বড় ঝড়ের আশঙ্কা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শীতকালীন সেটআপে তাপমাত্রা পরের সপ্তাহে ২-৩ ডিগ্রি নামতে পারে, এবং কলকাতায় নভেম্বরের শেষে কুয়াশার ঘনঘটা বাড়বে। যাত্রীদের টিপস: ছাতা এবং লাইট জ্যাকেট রাখুন, বিশেষ করে উত্তরের পাহাড়ি রাস্তায়। কৃষকরা আইএমডির অ্যাপ চেক করুন, কারণ স্থানীয় সতর্কতা আসতে পারে।


