মেঘলা আকাশের সাথে বাংলার আবহাওয়ায় মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস

আইএমডির সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, ১৮ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ উভয় অঞ্চলেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, (Weather Forecast)যা বজ্রপাতসহ ঝড়ো হতে পারে। উত্তরবঙ্গে মাঝারি…

weather report

আইএমডির সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে, ১৮ সেপ্টেম্বর উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গ উভয় অঞ্চলেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, (Weather Forecast)যা বজ্রপাতসহ ঝড়ো হতে পারে। উত্তরবঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি এবং কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গে তুলনামূলকভাবে সীমিত কিন্তু বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে।

এই আবহাওয়া পরিস্থিতি বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি চক্রবাত ঘূর্ণনের প্রভাবে গঠিত হয়েছে, যা দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে বৃষ্টির পরিমাণকে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক রাখবে। রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে এই বৃষ্টির কারণে যাতায়াত, কৃষি এবং দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হতে পারে, তাই স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে।

   

উত্তরবঙ্গের কথা বললে, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি , আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং মালদহের মতো জেলাগুলোতে ১৮ তারিখে ব্যাপক হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হবে, এবং কিছু স্থানে ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৬-২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে। আর্দ্রতার মাত্রা ৮০-৯০ শতাংশের কাছাকাছি রয়ে যাবে। বাতাসের গতি ১৫-২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা হতে পারে, এবং বজ্রপাতের সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া চলতে পারে। গত সপ্তাহে আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং জেলায় ৭-১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এই অঞ্চলের চা বাগান এবং কৃষিজমিকে প্রভাবিত করেছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ি এলাকায় ল্যান্ডস্লাইডের ঝুঁকি রয়েছে, তাই পর্যটক এবং স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা যেমন দিনাজপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকবে, উত্তরাঞ্চলে সামান্য বেশি এবং দক্ষিণে সামান্য কম।

Advertisements

কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১-৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৫-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টি হলে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থা, বিশেষ করে মেট্রো এবং রাস্তায় জল জমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। আইএমডির তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যে গড়ে ২০ দিনেরও বেশি বৃষ্টির দিন থাকে, এবং গত সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ায় ৪১-৪৮ কিলোমিটার গতির ঝড়ো হাওয়া রেকর্ড হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায়, যেমন ডিঘা এবং মন্দারমণি, সমুদ্রের ঢেউ বাড়তে পারে, তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই আবহাওয়ার কারণে রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় ল্যান্ডস্লাইড এবং নদীতে জলস্ফীতির ঝুঁকি রয়েছে, তাই স্থানীয়দের বাড়িঘর ছাড়া যাতায়াত না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে কলকাতা মহানগরে ড্রেনেজ সিস্টেম পরীক্ষা করা হচ্ছে, এবং বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ে ব্যাহতি হলে জেনারেটরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কৃষকদের জন্য বিশেষ সতর্কবার্তা জারি হয়েছে, যাতে ধানের ফসল এবং সবজি চাষে ক্ষতি না হয়। পর্যটকদের জন্য দার্জিলিং এবং ডোওয়ার্সের মতো এলাকায় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। আইএমডি-এর মতে, ১৮ তারিখে বজ্রপাতের সম্ভাবনা থাকায় বাইরে থাকা এড়িয়ে চলুন এবং লাইটনিং অ্যারেস্টার ব্যবহার করুন।