নেপাল অশান্ত, উত্তরবঙ্গে বুকিং জোয়ারে পাহাড়-ডুয়ার্স ভ্রমণ

ডুয়ার্স: দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে যেমন আনন্দ-উল্লাস, তেমনই চলে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা। একসময় পুজোর সময় বহু মানুষ নেপাল কিংবা উত্তর ভারতের পাহাড়ি…

ডুয়ার্স: দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে যেমন আনন্দ-উল্লাস, তেমনই চলে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা। একসময় পুজোর সময় বহু মানুষ নেপাল কিংবা উত্তর ভারতের পাহাড়ি রাজ্যে ভ্রমণের পরিকল্পনা করতেন। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। নেপালে অশান্তি এবং উত্তর ভারতে ধারাবাহিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে বহু পর্যটকই নিরাপদ বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন বাংলার পাহাড় ও ডুয়ার্সকে (Dooars)। ফলে উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পে এ বছর পুজো ঘিরে এসেছে আশার আলো।

দার্জিলিং, কালিম্পং এবং ডুয়ার্সের হোটেল, রিসর্ট, হোমস্টে— সব জায়গাতেই এখন বুকিংয়ের হিড়িক। হোটেল মালিকরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি রুম বুক হয়ে গিয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে পাহাড়ে পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষত দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলিতে এ বছর অভূতপূর্ব ভিড় দেখা যাবে বলেই ধারণা।

   

সাধারণত দুর্গাপুজোর সময় ডুয়ার্সে পর্যটকের ভিড় তুলনামূলক কম থাকে। কিন্তু এ বছর চিত্র পাল্টে গিয়েছে। লাটাগুড়ি রিসর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীব্যেন্দু দে জানিয়েছেন, “এবার অনেক পর্যটক যোগাযোগ করছেন। বিশেষত জলদাপাড়া, চিলাপাতা ও বক্সা পাহাড় ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন অনেকে।” এর ফলে ডুয়ার্সের বহু রিসর্ট ইতিমধ্যেই পুরোপুরি বুক হয়ে গেছে।

শুধু জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র নয়, অফবিট গন্তব্য যেমন সান্দাকফু, তাকদাহ, রিশপ, লোলেগাঁও, রাভাংলা— এসব জায়গাতেও হোমস্টে বুকিং বাড়ছে হু হু করে। যারা শহরের ভিড় এড়িয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য এগুলো বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।

Advertisements

পর্যটন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারের বুকিং জোয়ার শুধু পর্যটন শিল্পকেই নয়, উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করবে। কারণ পর্যটকরা হোটেল ও রিসর্টের পাশাপাশি স্থানীয় রেস্তোরাঁ, পরিবহন পরিষেবা, বাজার এবং হস্তশিল্পের দোকানেও সমানভাবে অর্থ ব্যয় করেন।

অন্যদিকে ট্যুর অপারেটররাও ইতিমধ্যেই প্যাকেজ ট্যুর তৈরি শুরু করেছেন। পরিবারভিত্তিক স্বল্প ব্যয়ের প্যাকেজ থেকে শুরু করে বিলাসবহুল প্রিমিয়াম ট্যুর— সবকিছুরই অফার রয়েছে। ফলে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, প্রত্যেক শ্রেণির পর্যটকই নিজের বাজেট অনুযায়ী প্যাকেজ বেছে নিতে পারবেন।

সব মিলিয়ে বলা যায়, দুর্গাপুজোর মরশুমে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সে পর্যটকের ঢল নামতে চলেছে। নেপাল ও উত্তর ভারতের বিপর্যস্ত পরিস্থিতি যেন বাংলার পর্যটন শিল্পের জন্য অপ্রত্যাশিত সুযোগ নিয়ে এসেছে। দার্জিলিংয়ের হিমালয় দর্শন থেকে শুরু করে ডুয়ার্সের জঙ্গল সাফারি— সব মিলিয়ে এবারের দুর্গোৎসব ঘিরে পর্যটনে বইবে খুশির হাওয়া।