শিলিগুড়িতে তৈরি হবে রাজ্যের সবচেয়ে বড় মহাকাল মন্দির, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Mamata Banerjee visit Sukhiapokhri

দার্জিলিং: উত্তরবঙ্গের ধর্মীয় পর্যটনে নতুন সংযোজন আসতে চলেছে। দার্জিলিঙে মহাকাল মন্দিরে (Mahakal Temple) পুজো দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন—শিলিগুড়িতে গড়ে উঠবে রাজ্যের সবচেয়ে বড় মহাকাল মন্দির। বৃহস্পতিবার পাহাড় সফরের শেষ দিনে প্রশাসনিক প্রধান এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি হয়েছে, রাজারহাটে দুর্গাঅঙ্গন হচ্ছে, এবার শিলিগুড়িতে তৈরি হবে সবচেয়ে বড় মহাকাল মন্দির। সেখানে থাকবে রাজ্যের বৃহত্তম শিবমূর্তি।”

Advertisements

এদিন সকালে দার্জিলিঙের ঐতিহ্যবাহী মহাকাল মন্দিরে সূর্যমুখী ফুল, দুধ ও বিল্বপাতা দিয়ে পূজা অর্চনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজো শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, “দার্জিলিঙের এই মন্দিরটি পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় অবস্থিত। ফলে বয়স্ক মানুষ বা শারীরিকভাবে সক্ষম নন এমন দর্শনার্থীদের জন্য উপরে ওঠা কঠিন। তাই সরকার এখানে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবস্থা করছে, যাতে সকলে সহজে দর্শন করতে পারেন।”

এই সফরে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক প্রশাসনিক কর্মসূচি এবং মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পাহাড়ে সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর হাসিমারা, মিরিক, সুকিয়াপোখরি ও দার্জিলিঙে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ান তিনি। দুর্গতদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন, আর্থিক সাহায্য ও একাধিক পরিবারকে নিয়োগপত্র দেন। এছাড়া জিটিএ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পরিকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটন বৃদ্ধির পরিকল্পনা এবং পাহাড়বাসীর সমস্যার সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নতুন ঘোষণা উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার করেছে। শিলিগুড়ির বাসিন্দারা বলছেন, এই মন্দির উত্তরবঙ্গের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। পাশাপাশি পর্যটন ক্ষেত্রেও আসবে বড় পরিবর্তন। শিবভক্তদের জন্য এটি হয়ে উঠবে এক অনন্য গন্তব্য।

Advertisements

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির এই মহাকাল মন্দিরটি আধুনিক স্থাপত্যে নির্মিত হবে। মন্দিরে থাকবে বিশাল আকারের শিবমূর্তি, ধ্যানকক্ষ, দর্শনার্থীদের বিশ্রামাগার এবং পরিবেশবান্ধব ইকো জোন। এছাড়া, মন্দির প্রাঙ্গণে থাকবে পর্যাপ্ত পার্কিং এলাকা ও ইলেকট্রিক যানবাহনের ব্যবস্থা, যাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে।

রাজ্যের পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পদক্ষেপ প্রশাসনের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পর্যটনকে গুরুত্ব দেওয়ারই আরেক উদাহরণ। দিঘার জগন্নাথ মন্দির, রাজারহাটের দুর্গাঅঙ্গনের পর এবার শিলিগুড়ির মহাকাল মন্দির রাজ্যের উত্তর প্রান্তে আধ্যাত্মিক ও অর্থনৈতিক উভয় উন্নয়নেই ভূমিকা রাখবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “পর্যটন, সংস্কৃতি এবং ধর্ম—এই তিনটি আমাদের রাজ্যের গর্ব। এগুলির বিকাশেই মানুষের কর্মসংস্থান এবং সামাজিক সম্প্রীতি বাড়বে।”