কোচবিহারে জাল আধার-ভোটার কার্ড নিয়ে গ্রেফতার বাংলাদেশি যুবক

অয়ন দে, কোচবিহার: জেলার (Cooch Behar) হলদিবাড়ি ব্লকের দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে বসবাস করা এক বাংলাদেশি যুবকের জাল আধার ও ভোটার কার্ড…

Cooch Behar Police Nab Bangladeshi for Forged Aadhaar, Voter Card

অয়ন দে, কোচবিহার: জেলার (Cooch Behar) হলদিবাড়ি ব্লকের দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে বসবাস করা এক বাংলাদেশি যুবকের জাল আধার ও ভোটার কার্ড তৈরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ধৃত যুবকের নাম রূপক চন্দ্র সেন। তার সঙ্গে তাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তার দত্তক পিতা উমেশ চন্দ্র সেনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের মেখলিগঞ্জ আদালতে পেশ করা হয়।

জানা গেছে, রূপক চন্দ্র সেন বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বগুড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন এবং জাল নথি ব্যবহার করে ভারতীয় আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি করেছিলেন। তার পরিচয়পত্রে পিতার নাম হিসেবে উল্লেখ রয়েছে উমেশ চন্দ্র সেনের নাম, যিনি দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদ্রাসা মোড় এলাকার বাসিন্দা। উমেশের দাবি, রূপক তার দত্তক পুত্র এবং ১৫ বছর বয়স থেকে তার বাড়িতে বসবাস করছে। তবে ভোটার তালিকায় উমেশের দুই ছেলের নাম থাকলেও তার এক ছেলে ও এক মেয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, যা সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।

   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রূপক বর্তমানে শিলিগুড়িতে কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি দেওয়ানগঞ্জে আবাস যোজনার ঘরের কাজ করতে এসেছিলেন, এবং সেই সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। জিজ্ঞাসাবাদে রূপক স্বীকার করেছেন যে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তার কাছ থেকে জাল আধার ও ভোটার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উমেশ চন্দ্র সেন রূপককে আশ্রয় দিয়ে তার জাল পরিচয়পত্র তৈরিতে সহায়তা করেছেন। এই ঘটনা জাল নথি তৈরির একটি বৃহত্তর চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

Advertisements

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা এলাকায় নতুন নয়। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় কোচবিহারে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তবে জাল আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি করে ভারতীয় নাগরিকের পরিচয়ে বসবাসের এই ঘটনা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। পুলিশ এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারী দল জানিয়েছে, জাল নথি তৈরির এই র‍্যাকেটে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি বা দালাল জড়িত থাকতে পারে।

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ রোধে সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নিরাপত্তার গুরুত্ব এবং জাল নথির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা আরও একবার তুলে ধরেছে।