অয়ন দে, কোচবিহার: বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা নিলুফা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়েছিল কুচবিহার জেলার দিনহাটা ভেটাগুড়ি সিঙ্গিজানি গ্রামের রোহন খন্দকারের সঙ্গে। কিন্তু বিয়ের মাত্র দুই বছরের মধ্যে নিলুফার হাতে চলে আসে ভোটার কার্ড। সঙ্গে আধার কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সও । এই সমস্ত কিছুর ওপর ভর করে ভারতের পাসপোর্ট এর জন্য আবেদনও করেছিল নিলুফা।
কিন্তু তার হাতে যখন ভারতের সরকারি নথি তখন আরেক হাতে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ভারতের দেওয়া ভিসা। যা দেখিয়ে এখনো ভারত বাংলাদেশে এপার ওপার হন তিনি। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগেই নিলুফার কাছে তথ্য জানতে চাওয়া হয়, তা দিতে না পারায় ভোটার কার্ড বাতিল হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনেও তিনি ছিলেন বৈধ ভোটার। এই ঘটনা সামনে আসতেই তোলপাড় হয়ে গেছে কুচবিহার জেলা। তাহলে কি? এরকম আরো নাম লুকিয়ে রয়েছে জেলা জুড়ে? এমনই অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা।
আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামে বেটন কাপের লড়াই দিয়ে কলকাতায় হকির নতুন দিগন্ত
নিলুফার শশুর লিয়াকত আলী জানান, বিয়ের পর পরই আবেদন করায় ছেলের বউয়ের ভোটের কার্ড ছাড়াও আধার কার্ড অন্যান্য কার্ড হয়ে যায়। কিছুদিন আগেই সেই ভোটার কার্ড আবার বাতিলও হয়েছে। সেই কাগজও রয়েছে তাদের কাছে।
নিলুফার শশুর বলেন, আমার বৌমা বাংলাদেশের সিলেটের বাসিন্দা। আমরা এখান থেকে ছেলে সহ তিনজন গিয়ে দেখাশোনা করেই বিয়ে করিয়ে নিয়ে এসেছি। ঘটনা প্রসঙ্গে ভেটাগুড়ি দুই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়াঙ্কা সরকার দে বলেন, বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব এরকম কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
তবে তার স্বামী তৃণমূলের অঞ্চল সহ-সভাপতি গৌতম দে বলেন, প্রধানের সার্টিফিকেট তুলতে গেলে গ্রাম পঞ্চায়েতের রেফারেন্স লাগে। সবকিছু ভেরিফাই করেই তবে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আমাদের আগের বোর্ড এই কাজ করে থাকলেও করতে পারে। ওই বাংলাদেশের মহিলা বর্তমানে ভিসার মেয়াদে ভারতে আছেন। এর থেকে বেশি জানা নেই।
তবে এই ঘটনাকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিজেপি, কোচবিহার জেলা বিজেপি সহ সভাপতি বিরাজ বোস বলেন, এস আই আর শুরু হতেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। ভুয়া ভোটার যত বাদ পড়বে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এই ভুয়ো ভোটার তৃণমূলেরই তৈরি করা। এর বিরুদ্ধে প্রশাসন কে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম জানান, ভোটার কার্ড বাতিল হয়েছে মানে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে, আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। সবটাই তদন্ত সাপেক্ষ। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত এর প্রধান তারাই বিষয়টি বলতে পারবেন, আমরাও বিষয়টি খোঁজ নেব।
এই নিয়ে ব্লকের দিনহাটা ১ ব্লকের বিডিও বলেন, আমি নতুন এসেছি সবকিছু খোঁজ নিয়ে জানাবো। তবে প্রশ্ন একটাই দানা বাঁধছে, বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা নিয়ে এসে ওই মহিলা কিভাবে ভোটার কার্ড হাতে পেতে পারে, এমনকি ভারতের হয়ে ভিসার জন্য আবেদন জানাতে পারে। তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে উঠছে প্রশ্ন।
