জলপাইগুড়ির বানারহাটে চরম জলকষ্ট! প্রশাসন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি বাসিন্দাদের

স্নেহা ঘোষ, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট শহরের সুকান্তপল্লী ও ক্ষুদিরামপল্লী এলাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে চরম জলকষ্টে (Water Crisis) ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে…

Jalpaiguri Banarhat Locals Demand Water, Threaten Administration Blockade

স্নেহা ঘোষ, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট শহরের সুকান্তপল্লী ও ক্ষুদিরামপল্লী এলাকায় গত দুই সপ্তাহ ধরে চরম জলকষ্টে (Water Crisis) ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পানীয় জলের অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, সারা দিনেও কলে এক ফোঁটা জল পাওয়া যাচ্ছে না, এমনকি দিনে একবেলাও পানীয় জলের সরবরাহ নেই। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত সমাধান না হলে পঞ্চায়েত অফিস ও বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বানারহাট বাজারের কিছু এলাকায় কলে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ হলেও সুকান্তপল্লী ও ক্ষুদিরামপল্লী এলাকার কলনিগুলিতে কোনও জল আসছে না। এই বৈষম্যের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এক বাসিন্দা, রমা দাস, বলেন, “এই গরমে জল ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। আমাদের এলাকায় কেন জল আসছে না, প্রশাসন কি আমাদের কথা ভাবে না?” বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকার একটি ছোট রিজার্ভার থেকে কোনওমতে জল সংগ্রহ করে দৈনন্দিন কাজ চালাতে হচ্ছে। তবে তাতেও পানীয় জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।

   

বানারহাট শহরে পানীয় জলের বিকল্প কোনও উৎস না থাকায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর (PHED)-এর সরবরাহ করা জলই এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা। বিভিন্ন বাড়িতে হাউস কানেকশনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে এই সংযোগগুলি থেকে জল সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক গৃহবধূ, মিতা সরকার, বলেন, “বাচ্চাদের জন্য পানীয় জল কিনতে হচ্ছে। এত গরমে এভাবে কতদিন চলবে?”

Advertisements

বাসিন্দাদের প্রশ্ন, কেন এই বসতি এলাকার একটি বড় অংশকে পানীয় জল থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে? তাঁরা জানিয়েছেন, PHED-এর কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনও সমাধান হয়নি। এই অবস্থায় তাঁরা জনবিক্ষোভের পথে হাঁটতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। স্থানীয় এক সমাজকর্মী বলেন, “এটা মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন। জল ছাড়া কীভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব? প্রশাসনের উদাসীনতা আর সহ্য করা যাবে না।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পানীয় জলের সরবরাহে সমস্যার কারণ হিসেবে পাইপলাইনের ক্ষতি ও পাম্পের ত্রুটির কথা বলা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা সমাধানে কবে থেকে কাজ শুরু হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য মেলেনি। বাসিন্দারা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এই জলকষ্টের সমাধান করবে। এই ঘটনা পানীয় জলের মতো মৌলিক সুবিধার অভাব এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।