বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, ঠিক সেই সময় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একাধিক গাছের ডাল কাটার অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশবিদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন।
হাসপাতের সুপার ডাক্তার সঞ্জয় মল্লিক বলেন সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর জন্য গাছগুলোর ছোট ডাল গুলো কাটা হচ্ছে। হাসপাতালের বিশেষ বিশেষ কিছু করিডোর এবং ওয়ার্ড দৃশ্যমান হচ্ছে না তাই এই সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু প্রশ্ন এটাই যে কেটেফেলা ডাল গুলো উধাও হয়ে গেছে এবং বন দপ্তরের অনুমতি ছাড়া কি করে এতো পুরো গাছের দল কাটা হতে পারে তা নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।
পরিবেশবিদরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাদের বক্তব্য, বিশ্বজুড়ে যখন গাছ লাগানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন সরকারি হাসপাতালে গাছ কাটা দুর্ভাগ্যজনক। পরিবেশ কর্মী অভিজিৎ ধর বলেন, “উন্নয়ন প্রয়োজন, তবে তা প্রকৃতির বিনাশ ঘটিয়ে করা উচিত নয়। যেহেতু হাসপাতাল প্রাঙ্গণ সবুজে ঘেরা হওয়া দরকার, তাই বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে দেখা উচিত ছিল।” চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীরাও এই বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। “আমরা বেকার” নামে একটি সংস্থার পক্ষে সজল দত্ত বলেন “যেভাবে গাছ গুলো কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায়না। এই সংস্থাটিও বৃক্ষরোপন এবং এবং গাছের পরিচর্যার সঙ্গে যুক্ত।
গাছ কাটার জন্য পরিবেশ দপ্তর ও বন দপ্তরের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। এই বিষয়ে পরিবেশ দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শিলিগুড়ি ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা হাসপাতালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেন গাছ কাটা বন্ধ করে এবং নতুন গাছ রোপণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে গাছ কাটার ঘটনা নতুন করে পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। একদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই, অন্যদিকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে প্রকৃতির ক্ষতি—এই দ্বন্দ্বের সমাধান কীভাবে হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।